রাজধানীর পল্টন থানায় নাশকতার অভিযোগে করা এক মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে দুই কার্যদিবসের মধ্যে জেলগেটে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরি শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
এদিন তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। এ সময় তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে দুই দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক সুমিত কুমার সাহা তাদের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছিলেন। এ বিষয় শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য ছিল।
এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। অপরদিকে আসামিপক্ষে তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান, মহসিন মিয়া, ওমর ফারুক ফারুকীসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকেল তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এই সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এ ঘটনার পর ওইদিন মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপরদিকে গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।