রাজধানী ঢাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকাসহ বড় একটি এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ না থাকায় চুলা জ্বলছে না।
কবে নাগাদ এই সংকট দূর হতে পারে জানতে চাইলে-বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গণমাধ্যমে বলেন, “আনোয়ারা ফৌজদারহাট ক্ষতিগ্রস্ত পাইপ লাইন মেরামত হয়েছে, সেটা দিয়ে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে পুরো সংকট কেটে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সংকট আজ (রোববার) থেকে অনেকটাই কেটে যাবে।”
দেশে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছিলে দৈনিক ৩১০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে গত ২৭ মে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামিটের এলএনজি টার্মিনাল, এতে ৫৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। এরপর গত বুধবার মহেশখালী আনোয়ারা ফৌজদারহাট পাইপ লাইন একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়ির ফলে কেটে যায়, এতে অবশিষ্ট টার্মিনাল দিয়ে সরবরাহ করা ৫৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
শনিবার (১৩ জুলাই) আনোয়ারা ফৌজদারহাট পাইপ লাইন মেরামতের কাজ শেষ হয় এবং ওই পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এরপরও কমেনি গ্যাস সংকট।
এ দিকে সামিটের টার্মিনালটি সিঙ্গাপুর থেকে মেরামত শেষে মহেশখালীতে এসেছে। তবে এই টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করতে আরও ১৪-১৫ দিন লাগবে। এর আগে গ্যাস সংকট পুরোটা কাটবে না বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক এবং আবাসিকে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। সবখানেই গ্যাস সংকট বেড়ে চলেছে। সংশ্লিষ্টদের হিসাব বলছে, দেশে এখন প্রতিদিন ৪০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। ফলে প্রতিদিন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ঘনফুট।
রাজধানীতে সিএনজি স্টেশনের বাইরেও লম্বা লাইন দেখা যায়। শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার গৃহস্থালি কাজে গ্যাসের চাপ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা। ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় সকাল ৯টার পর গ্যাস থাকছে না।