শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমস হাউজের গুদাম বা ভল্ট থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কাস্টমস হাউস কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদ, মো. শহীদুল ইসলাম, মাসুম রানা ও আকরাম শেখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রোববার। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে অজ্ঞাতদের আসামি করে। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে কাস্টমস হাউস।
এর আগে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে গোযেন্দা বিভাগ। এখন পর্যন্ত কাস্টমসের আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চারজন সিপাহি। তবে সন্দেহের তালিকায় আরও অনেকে রয়েছেন। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে মূল সন্দেহভাজন হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম সাহেদ। তিনি ঢাকা কাস্টম হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠজন। স্বর্ণ চুরির ঘটনায় আলোচিত এই মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত বৃহস্পতিবার (সেপ্টেম্বর) ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, “যারা বদলি হয়েছেন, নতুন এসেছেন, আগে-পরে সেখানে যাতায়াত করেছেন, তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি, যারা গুদামে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই। এর পর আটজনকে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “বিমানবন্দরের মতো জায়গায় যেখানে কঠোর নিরাপত্তা, সেখান থেকে স্বর্ণ গায়েবের ঘটনা আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। নিয়ম অনুযায়ী যারা বদলি হবেন, তারা নতুনদের কাছে সব কিছু বুঝিয়ে দেবেন। সেখানে সিসিটিভি লাগানো ছিল কিনা, নষ্ট ছিল কিনা– সব দেখা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসব।”
কাস্টমসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কিনা, জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকলে ঊর্ধ্বতন কেউ জড়িত থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না।