‘সাবেক গভর্নর ১২ বিলিয়ন ডলার নিঃশেষ করে ঘুমিয়ে আছেন’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম
‘সাবেক গভর্নর ১২ বিলিয়ন ডলার নিঃশেষ করে ঘুমিয়ে আছেন’
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

সাবেক গভর্নর ১২ বিলিয়ন ডলার নিঃশেষ করে ঘুমিয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, “সাবেক গভর্নর ৪২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করতে করতে ৩০ বিলিয়নে নিয়ে এলেন। কারণ ছিল, বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল করা। কিন্তু কোনোই কাজ হয়নি।”

শনিবার (১৬ নভেম্বর) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “সবাই বলছে, এত কিছু করার পরও মূল্যস্ফীতি কেন কমছে না। এর প্রধান কারণ, আগের সরকারের ভুল নীতি। গত ১৫ বছরে অর্থনীতিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার স্বল্প মেয়াদি সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রায় কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। তবে সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত পুরো অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়।”

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “দেশকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য আমরা একটি নতুন রাস্তা তৈরি করছি। পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হবে। তাহলেই শান্তি ফিরে আসবে। আর যদি পুনরায় দুর্নীতি শুরু করেন, তাহলে জনগণ আবারও ফুঁসে উঠতে পারে।”

তথ্যগত বিশ্বস্ততার বিষয়ে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এতদিন বিবিএসসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব তথ্য দিয়ে এসেছে, সেগুলোতে প্রশ্ন রয়েছে। আমি অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি, তথ্যপ্রবাহ সঠিক রাখতে। সঠিক তথ্য না এলে, অন্যান্য তথ্যগুলো ভুল আসবে। নীতিমালা প্রণয়ন ঠিক হবে না। এতদিন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছিল না বলে এই সমস্যাগুলো হয়েছে। কোনো কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলেই সে বলে এই দুর্নীতি আমার আমলে ঘটেনি। আবার সে চলে গেলে পরের কর্মকর্তা এসেও একই উত্তর দেয়। এসব কারণেই একের পর এক দুর্নীতি ও অন্যায় হয়েছে, যার মাশুল দিচ্ছে দেশের জনগণ।”

ফিজিবিলিটি টেস্ট না করেই অনেক প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “একটি প্রজেক্ট থেকে কত টাকা আয় হবে, কত টাকা ব্যয় হবে, কত দিন সময় লাগবে এবং এসব প্রজেক্টে বিপরীতে নেওয়া ঋণের সুদের হার কী হবে, এসব বিষয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি। উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরই একটি সংস্থা আমাদের উচ্চ সুদে ঋণ দিতে চেয়েছিল। আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ উচ্চ সুদের ঋণ নিলে আমরা পরিশোধ করতে পারব না।” 

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য তোমরা আন্দোলন করেছ। সেই সাহসিকতার জন্য তোমাদের শুভেচ্ছা। কিন্তু পড়াশোনাতেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ অন্যজনকে ধাক্কা দিয়ে অনেক টাকা-পয়সার মালিক হলে কোনো লাভ নেই। এখন অনেক টাকা-পয়সার মালিক তার নিজের গাড়ি উপভোগ করতে পারছে না। তোমরা যদি সুশিক্ষা অর্জন করতে পারো, তাহলে সেই সম্পদ কেউ লুট করতে পারবে না। আমরাও ছাত্রজীবনে অনেক কিছু করেছি। কিন্তু পড়াশোনাটা ভালোভাবে করেছিলাম বলে একটা ভালো চাকরি পেয়েছিলাম। তোমাদেরও বলতে চাই, চাকরিজীবনে সাহসের সঙ্গে কাজ করবে।”

Link copied!