• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

‘ফায়ারিং হলো, দৌড় দিলাম, পেছনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া রাস্তায় পড়ে আছে’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম
‘ফায়ারিং হলো, দৌড় দিলাম, পেছনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া রাস্তায় পড়ে আছে’
নিহত তাহির জামান প্রিয়। ছবি : সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান কারফিউয়ের মাঝে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ২০শে জুলাই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়।

তার বন্ধুরা বলছেন, মৃত্যুর পর তার লাশ সড়কেই পড়ে ছিল। কেউ হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। বরং, পরে তার লাশের সন্ধান মেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতলের মর্গে।

ফারিয়া উলফাত সৈয়দ নামক একজন লিখেছেন যে ঢাকার গ্রিন রোডের ল্যাবএইডের পেছনে বিকেল পাঁচটার দিকে তিনি তাহির জামান প্রিয়কে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেছেন।

তারা একসঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি লেখেন, “ল্যাবএইডের পেছনে পুলিশের ঘেরাও করে রাখা একটি রাস্তায় একজন মানুষ একটা বডি টেনে সেন্ট্রাল রোডে আনার চেষ্টা করছে। আর, হাত দিয়ে ডাকছে…উনাকে হেল্প করতে। আমি সবার পেছনে থাকায় দেখতে পাই।”

“সাহস করে উনাকে হেল্প করতে একটু কাছে যেতেই দেখি মানুষটার মাথার পিছন জুড়ে রক্ত, নিথর দেহ…মানুষটা প্রিয় ভাই…দুই মিনিট আগে আমাকে যে একসাথে থাকতে বলল।”

তিনি আরও লেখেন, “ভাইয়ার কাছাকাছি যেতেই আবার ফায়ারিং হলো, আর আমি এবার সত্যিকারের দৌড় দিলাম। দৌড়ানোর সময় তাকালাম পিছে, রাস্তায় ভাইয়া পড়ে আছে, একলা। কিন্তু আনতে পারলাম না। ভাইয়ার লাশ কই আছে, খুঁজতে খুঁজতে ওইদিন রাত ১২টা-১টা বেজেছে।”

কিন্তু তাহির জামান প্রিয় যখন মারা যান, তখন দেশজুড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ফলে সারা দেশের মানুষ একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তার অনেক বন্ধুরা তার মৃত্যুর খবর পাননি, শেষ বিদায় জানাতে পারেননি।

গত বুধবার থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ কিছুটা চালু হলে একসময়ের কাছের বন্ধু ‘প্রিয়’র মৃত্যুর খবর জানতে পারেন মেহেরুন নাহার মেঘলা।

তিনি আফসোস করে বিবিসিকে বলেন, “আজ পাঁচদিন পর জানতে পারলাম – প্রিয় আর নাই।”

“ওরা তিনজন ছিল। একজনের হাত ঘেঁষে ওর মাথায় গিয়ে গুলি লাগছে। লাশটা পড়ে ছিল। গোলাগুলির মাঝে কেউ উদ্ধার করতে পারেনি। দুইদিন পরে পরিবার লাশ নিতে পারছে।”

প্রিয়’র চার বছর বসয়ী একটা কন্যা সন্তান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাচ্চাটাকে মাত্র একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করছিলো। প্রিয়ই ওর বাবা-মা ছিল।” সূত্র : বিবিসি বাংলা

Link copied!