বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্বাচনে আনতে তাদের মুক্তিসহ নানা বিষয় নিয়ে নিজের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
সোমবার (১৮ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যে কথা বলেছিল, তা চিন্তা করেই বলা হয়েছিল। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অর্থ কী? বিএনপি যদি রাজি হয়, তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। আমি সেই কথাটিই বলেছি।”
এর আগে একটি বেসরকারি (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর) টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারের উদ্যোগের কথা বলেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছিলেন, “বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে, তারা যদি নির্বাচনে আসে, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে এবং পিছিয়ে দেওয়া নয়, বলা হয়েছিল তাদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
ওই চ্যানেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “২০ হাজার (বিএনপি নেতাকর্মী) গ্রেপ্তার না করলে আজকে এই যে হরতালে গাড়ি চলতেছে, আপনি কি রাস্তায় গাড়ি দেখতেন? এছাড়া আমাদের জন্য কোনো গন্তব্য ছিল না, কোনো অলটারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি, আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ সব সময় চেয়েছে সব রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপি একটি বড় দল, এটি তারা সব সময় বলে। বিএনপিরও অংশগ্রহণ করা দরকার। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার নানা ফন্দি করেছে।”
তার (মন্ত্রী) বক্তব্য হলো, আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে চেয়েছে বিএনপি অংশগ্রহণ (নির্বাচনে) করুক। এ কথাটি বলতে গিয়ে তিনি সেদিন কিছু কথাবার্তা বলেছেন।
বক্তব্যের ব্যাখ্যায় কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমি সেদিন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে এটিও বলেছি, বিএনপি চায় নির্বাচনটি বানচাল হোক। তারেক জিয়ার নামে মামলা হয়েছে, শাস্তি হয়েছে, তার মায়ের (বেগম খালেদা জিয়া) শাস্তি হয়েছে। আমার ধারণা, তারা নির্বাচনে আসতে চায়নি।”
বিএনপি সব সময় নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে উল্লেখ করে রাজ্জাক বলেন, “আওয়ামী লীগের বক্তব্য হচ্ছে সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনোক্রমেই নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ভারত, শ্রীলঙ্কা, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হয় না। কাজেই আওয়ামী লীগের কাছে কোনো বিকল্প নেই। এই কথাটিই বলেছি।”
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, গাজীপুরে রেললাইন কেটে দেওয়া এবং ২০১৩ ও ২০১৪ সালের সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে আব্দুর রাজ্জাক জানান, সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেছিলেন, যদি এগুলো বন্ধ করতে হয়, তাহলে গ্রেপ্তার তো করতেই হবে।
আব্দুর রাজ্জাক আরও জানান, বিএনপি নেতাদের তিনি ছেড়ে দেবেন, বিষয়টি তা নয়। জামিন দিয়ে, আনুষ্ঠানিকতা করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমার বক্তব্যে আমি বারবার বলেছি, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আলাপ-আলোচনা করে অনেক কিছু করা যায়।”