তাপপ্রবাহে পুড়ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। তাপমাত্রা কখনও ৩৫ ডিগ্রি, কখনও আবার উঠে যাচ্ছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। চলতি মাসেই তাপমাত্রা বেড়ে ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন অসহনীয় তাপমাত্রায় জনজীবন যখন অতিষ্ট তখন প্রচণ্ড ভিড় বেড়েছে ফ্যান, এসি, ফ্রিজের শোরুমগুলোতে।
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ঈদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে শোরুমগুলো খোলা রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, গত মার্চ থেকেই ফ্যান, এসি ও ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগানে টানও পড়েছে। অনেকের এসির স্টক ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে শো-রুমগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এক সময় ক্রেতারা বিদেশি ব্র্যান্ডে ঝুঁকলেও, এখন দেশি পণ্যের ওপর আস্থা বেড়েছে। বনানী ভিশনের শো-রুমে এসি কিনতে আসা মহিবুল হক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার ছোট ছোট দুই সন্তান রয়েছে। গরম এতটাই বেড়েছে যে রাতে ঘুমাতে দেয় না। দেখছি গরম থেকে বাচতে এসি কেনা ছাড়া উপায় নেই। দাম যেমনই হোক এসি কিনতেই হবে।”
উত্তরায় একটি শো-রুমে এসি কিনতে আসা আজাদ শেখ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গরম আর গরম। ফ্যান সারারাত চললে ফ্যানের বাতাসও গরম হয়ে যায়। রাতে ঘুম হয় না। সারাদিন অফিস করে রাতে ঘুম না হলে অসুস্থ হয়ে যাই। তাই সব দিক ভেবে এসি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দাম কিছুটা বেশি।
রাজধানীর কল্যাণপুরের ব্যবসায়ী ইকবাল সরকার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “তাপমাত্রা যেভাবে বাড়তে তাতে ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছে না। তাই এসি কেনার আগ্রহ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ফলে বেচাকেনাও বেশি হচ্ছে’।
ইকবাল সরকার জানালেন, গেলবারের চেয়ে এবার এসির দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে জানালেন, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহকারী দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গেল বছরে যে এসি এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেসব এসির দাম ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
ফ্রিজ ও এসি উৎপাদনকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের প্রোডাক্ট ম্যানেজর (এসি) এস.এম. সাকিবুর রহমান বলেন, ‘আগে সবাই মনে করতেন এসি বিলাসবহুল একটি পণ্য। কিন্তু এখন এটা নিত্যপণ্যে পরিণত হয়েছে’।
অবশ্য গরম বেড়ে যাওয়ার কারণে শোরুমগুলোতে ফ্যানের বেচাকেনাও অনেক বেড়ে গেছে। বাসাসহ বিভিন্ন অফিসে ফ্যানের চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে চাহিদা বেড়ে গেলেও ফ্যানের দাম সেই তুলনায় বাড়েনি বলেই জানালেন ব্যবসায়ীরা। যারা এসি কিনতে পারছেন না তারা অন্তত ফ্যান কিনছেন।
এদিকে, প্রচণ্ড গরম পড়ার কারণে ফ্রিজের বেচাবিক্রিও বেড়ে গেছে। শোরুমগুলোতে তার প্রভাব পড়েছে। ঈদের আগে ফ্রিজের চাহিদা যেমন ছিল তেমনটাই রয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফ্রিজের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে চাহিদাও বেড়েছে অনেক।