দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার (২২ এপ্রিল) ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। তাকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। সফরকালে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে জানা গেছে।
সেগুলোর চুক্তি সই হবে : দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি, উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি, দুই দেশের দণ্ডপ্রাপ্তদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে : শ্রমশক্তিবিষয়ক সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ক্রীড়াক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক ও কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
এদিকে কাতারের আমিরের সফর নিয়ে রোববার (২১ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, “কাতার মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার, যেখানে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। এছাড়া বিপুল পরিমাণ সার্বভৌম তহবিল রয়েছে কাতারের এবং বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের উৎস হতে পারে ওই তহবিল। একইসঙ্গে বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি আমদানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস কাতার।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সরকারকালীন সময়ে (১৯৭৪ সালে) বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক, যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পরিধি সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, জ্বালানি, বিমান চলাচল, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে।”
কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় একটি সড়কের নামকরণ হবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “ঢাকা উত্তরের মিরপুরের কালসি এলাকায় বালুর মাঠের নির্মিতব্য পার্ক এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালসি উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি আমিরের নামে করা হবে।”
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত এবং গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। কাতার এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্বাভাবিকভাবে এ আলোচনা আসতেই পারে।”