বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, ‘বিএনপি সাত-আট বছর আগ থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। একবারেই কি সংস্কার হয়? এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে। যে সরকারই আসুক সংস্কার করতে হবে। যেগুলো হাতে থাকবে সেগুলো, আবার নতুন কোনো সংস্কার।’
সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা তো সংস্কার চাই। তবে নির্বাচন বিলম্ব করার কোনো কারণ দেখি না। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা, তারপর গরম। এরপর এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। কাজেই জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচনটা হওয়াই ভালো। এরপরে গেলেই জনগণ ও বিএনপি মানবে না।’
সংস্কারের বিপক্ষে নয় বিএনপি, তবে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হলে আবারও আন্দোলনের নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দেয়া রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব প্রকাশ করে একমাসের মধ্যেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব।
জুলাই বিপ্লবের পর ভেঙে পড়া রাষ্ট্র মেরামতে সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাড়া আশা জাগিয়েছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দেড়যুগের ভোটাধিকার ফিরে পাবার আকাঙ্ক্ষাও। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি, সংস্কারের পাশাপাশি শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিজেদের অবস্থানে অনড়।
এ নিয়ে বরাবরের মতোই কিছু মহলের সমালোচনার মুখে বিএনপি। প্রশ্ন উঠছে দলটি সংস্কার চায় নাকি ক্ষমতা চায়। তবে বিএনপির নেতাদের সাফ জবাব, স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় থাকতেই রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়ে এসেছেন তারা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবেও সাড়া দিয়ে বিএনপি ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে।
ডিসম্বরের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ আদায়ে নিজেদের মতামতের সঙ্গে ঐকমত্যে শরিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগে কারও মুখ দিয়ে সংস্কারের শব্দ বের হয়নি। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের কথা বলে আসছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেয়া সব রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রস্তাব প্রকাশ করলে জনগণও জানল একমত কোথায় হয়েছে কোথায় হয়নি। যেখানে ঐকমত হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার একমাসের মধ্যে সমাধান করা যাবে।
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে নির্বাচন হতে পারে।’ দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, বাঁচিয়ে রাখা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করাসহ সমস্ত উদ্যোগ বিএনপির নেতৃত্বে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে।’