খুচরা বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। সে অনুযায়ী খুচরায় ডিম বিক্রি হওয়ার কথা প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সায়। অথচ বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে। আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা করে। আর পণ্যটি দামে আরও ‘শক্তিশালী’ হয়ে উঠল। দাম নিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ-অসন্তোষ থাকলেও সেসব পাত্তাই যেন দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। দাম নিয়ে প্রশ্ন তুললেই তারা বলছেন, ‘নিলে নেন, না নিলে সামনে হাঁটেন।’
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর মগবাজার-রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা অফিসে বসে একটা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেখানে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাদের দাবি, দেশের বাজারে মুরগির খাদ্যের প্রচুর দাম। তা ছাড়া অতিরিক্ত গরমের জন্য খামারে ডিমের উৎপাদনও কমে গেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমেছে। আর সরবরাহ কমায় ডিমের দাম বেড়ে গেছে। তবে বাজারে আসা ভোক্তাদেরও পাল্টা প্রশ্ন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি পিস ডিম আমদানি খরচসহ ৭ টাকা দাম পড়লেও বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিম কেন প্রতি পিস ১৪-১৫ টাকা হবে?
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে প্রায় ২৮ টাকা বেশি। আর কেউ যদি পিস হিসেবে (এক ডজনের কম) কিনতে আসেন, সে ক্ষেত্রে প্রতি পিসের দাম ১৫ টাকা, যা ডজন হিসেবে গিয়ে দাঁড়ায় ১৮০ টাকায়। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের ডজনও অধিকাংশ বাজারে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; কোথাও কোথাও অবশ্য ৫ টাকা কমেও পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে গত সপ্তাহে সাদা ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজন প্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে।
ডিমকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একে বলা হয় সুপার ফুড। এতে উচ্চ প্রোটিন, প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। অনেকে কোলেস্টেরলের ভয়ে ডিম খান না। কিন্তু এটি ঠিক নয়। কারণ, একটি ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা খুব বেশি নয়।
একটি সিদ্ধ ডিমে রয়েছে ৭৮ ক্যালরি, ৬ দশমিক ৩ গ্রাম প্রোটিন, ৫ দশমিক ৩৪ গ্রাম ফ্যাট ও সামান্য কার্বোহাইড্রেট। এ ছাড়া রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, আয়োডিন, সেলেনিয়াম, ফসফোরিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন ডি, জিংক, ফোলেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলিন, লুটেইন, জেক্সানথিন।