• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ছবি আঁকাই তাদের পেশা


বিজন কুমার
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ১০:০১ পিএম
ছবি আঁকাই তাদের পেশা
জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ছবি আঁকছেন একজন শিল্পী। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

দিন শেষে সূর্য ঘরে ফিরেছে। চারিদিকে ঘনিয়েছে অন্ধকার। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ল্যাম্পপোস্টের লাইটগুলো জ্বলে উঠলো একে একে সবগুলোই। কিন্তু সেই আলো পর্যাপ্ত নয় কাজি সোহেলের জন্য। তিনি একটি টর্চ জ্বালিয়ে, বসে পড়লেন ফুটপাতে। উদ্দেশ্যে, ছবি আঁকবেন। 

এরপর ব্যাগ থেকে নিজের আঁকা কয়েকটি ছবি বের করলেন। দেখা গেল, তিনি এঁকেছেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, সুচিত্রা সেনসহ বেশ কয়েকজনের ছবি। এর মধ্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের ছবিটি নিজের হাতের কাছে রেখে শুরু করলেন ছবি আঁকার কাজ। এটা দেখে মনে হতেই পারে জয়নুল আবেদীন তার একমাত্র অনুপ্রেরণা।

ভাবতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমন চিত্রের দেখা মিলেছে, জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে। সন্ধ্যা হলেই এই ফুটপাতে আড্ডা প্রিয় মানুষদের আনাগোনা বাড়ে। তখন তিনিও চলে আসেন এই স্থানে। তবে শুধু এই কাজি সোহেল নয়, তারমতো বেশ কয়েকজন আসেন একই কাজের জন্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, তাদের ছবি আঁকা দেখে অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন আশেপাশে। সোহেল এসময় মোবাইলের মধ্যে থাকা এক দম্পতির ছবি দেখে দেখে আঁকছিলেন। একদম নিখুঁত এবং মোবাইলে থাকা ছবিটির মতোই।

চিত্রকর এসব মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড্ডা প্রিয় মানুষরাই তাদের ছবির ক্রেতা। তারা এখানে উপার্জনের উদ্দেশ্যেই আসেন। একটি ছবি এঁকে দেওয়ার জন্য তারা ন্যুনতম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা নিয়ে থাকেন। তারা মনে করেন, কোনো কাজেই ছোট নয়। মনের ইচ্ছাশক্তি আর একাগ্রতাই পারে নিজের কাজে সফলতা এনে দিতে।  

কাজি সোহেলের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেঁড়ামারা এলাকায়। তিনি প্রাইভেট একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলা বিষয়ে পড়ালেখা করেছেন। আলাপকালে কাজি সোহেল আহম্মেদ বলেন, “এই কাজে শখের বশে আসলেও এখন পেশা। ৮ থেকে ১০ বছর আগে কাজটি শুরু করেছিলাম। শুরুর দিকে যখন পারতাম না। তখন খুব খারাপ লাগতো। এখন আঁকতে আঁকতে আয়ত্বে চলে এসেছে। এই কাজ যে কেউ করতে পারবে। যদি সে মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করে। ছবি মনের কথা বলে, তাই ছবি আঁকতে গেলে মনকে স্থির করে তারপরে আঁকতে হবে।”

সুজন নামের আরেক চিত্রকর বলেন, “আমি ছোট বেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভালোবাসি। এখন ছবি আঁকাকে পেশা হিসাবে নিয়েছি। পাশাপাশি একটা স্কুলে ছাত্রদের ছবি আঁকা শেখাই। আমার ছবি আঁকা দেখে যখন মানুষরা এগিয়ে আসেন। তখন খুব আনন্দ পাই।”

Link copied!