বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টায় ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মামুন মোস্তাফী তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
মামুন মোস্তাফী বলেন, "অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি আমাদের সবার প্রিয় বড়ভাই (ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী) আর আমাদের মধ্যে নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আপনাদের সকলে প্রতি আমার নিবেদন, আপনারা সবাই তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহশত নসীব করেন।"
বহু বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ৮২ বছর বয়সি ডা. জাফরুল্লাহ ।গত ৫ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কয়েকদিন ধরে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। যে হাসপাতাল থেকে মুক্তিযুদ্ধে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হতো।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তবে পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরামর্শ অনুযায়ী করে নাম পরিবর্তন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র রাখেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। তিনি ১৯৮২ সালর ওষুধ নীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন। বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে বিশ্বে তার খ্যাতি রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। দশ ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় জাফরুল্লাহ চৌধুরী।