• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোটা আন্দোলনকারীদের সতর্ক করলেন ডিএমপি কমিশনার


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম
কোটা আন্দোলনকারীদের সতর্ক করলেন ডিএমপি কমিশনার
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

আন্দোলন করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করলে পুলিশ বরদাস্ত করবে না বলে সতর্ক করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। 

শুক্রবার (১২ জুলাই) অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্র্যাবের স্পোর্টস কার্নিভ্যাল উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, “আদালতের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত এবং আদালতের নির্দেশনা মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে সেটি বরদাস্ত করা হবে না।”

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সড়ক ও রেল আটকে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। এতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়।

পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।

বিষয়টি আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবে না। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকেলে আবারও ‍‍`ব্লকেড‍‍` কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এরমধ্যে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। একই সঙ্গে জনদুর্ভোগ তৈরি হলে আন্দোলনকারীদের বিষয়ে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিতও দেন তিনি।

কোটা আন্দোলনে সাংবাদিকের ওপর হামলা কোটা আন্দোলনে সাংবাদিকের ওপর হামলা 
অবশ্য সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার সড়কে নামে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বিকেল সোয়া ৩টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ অন্তত ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ৭ জন আহত হন।

চট্টগ্রামের টাইগার পাস মোড়েও পুলিশের সাথে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। তারা দাবি করেন, কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা–আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিকেলে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি, সংসদ আইন পাস করে কোটা সংস্কারের বিষয়টির সুরাহা করতে হবে। প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধের পর রাত ৯টায় ক্যাম্পাসে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।

তবে এর আগে শুক্রবারের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী এ দিন বিকেলে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। 

Link copied!