সাইফুল ইসলাম। ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন উত্তরায়। শনিবার (১৫ জুন) উত্তরার জসিমউদ্দিন থেকে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট অ্যাভিনিউ পরিবহনে করে কারওয়ান বাজারে এসেছেন মাত্র এক ঘণ্টায়। আর স্বাভাবিক সময়ে অসহনীয় যানজটে সময় লাগে দুই ঘণ্টা বা তারও বেশি। দুই ঘণ্টার রাস্তা এক ঘণ্টায় আসতে পেরে খুশি তিনি। ঢাকার সড়ক সবসময়ই যেন ফাঁকা থাকে এমন প্রত্যাশা তার।
সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে আলাপকালে সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঈদের মধ্যে ঢাকায় চলাচল করে খুবই তৃপ্তি মেলে। আব্দুল্লাহপুর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত চাইলেই স্বল্প সময়ে যাতায়াত করা যায়। এক দিকে তেমন ভালো লাগে, অন্যদিকে ঢাকার খোলামেলা পরিবেশ মুগ্ধ করে যে কাউকে। এমন পরিবেশ সবসময়ই চায় ঢাকাবাসীরা।”
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, “ঈদে ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অধিকাংশ মানুষ বাড়ি ফিরছেন। তাই যানজট কমেছে।”
সরেজমিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ে ছোট-বড় যানবাহনে ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা সড়কগুলো এখন অনেকটাই ফাঁকা। যেখানে প্রতি সিগন্যাল পার হতে আধাঘণ্টা সময় ব্যয় হতো, এখন সেখানে দশ মিনিটও সময় লাগছে না। ফলে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে স্বল্প সময়ে পার হচ্ছেন পথচারীরা।
কাউসার নামের এক পথচারী বলেন, “ফাঁকা ঢাকা দেখতে খুব ভালো লাগে। এমন ঢাকা আমরা সবসময়ই চাই। এখন মন চায় পুরো ঢাকা শহর ঘুরে দেখি। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে অসহনীয় যানজটে এই আশা হয় না।”
সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, এ বছর আগামী ১৬-১৯ জুন এপ্রিল পর্যন্ত ঈদুল আজহার নির্ধারিত সরকারি ছুটি। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার। সব মিলিয়ে চাকরিজীবীরা এবার ছুটি পাচ্ছেন পাঁচ দিন। এই ছুটি পরিপূর্ণভাবে কাটাতে বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করেই বাড়ি ছুটেছেন অনেকে। এ ছাড়া অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রাইভেট কোম্পানির কর্মকর্তা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন শুক্রবার। ফলে এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে এবং শুক্রবার (১৪ জুন) দিনভর দেখা গেছে। তবে শনিবারও (১৫ জুন) বাস ও রেলস্টেশনগুলোতে ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতি দেখা গেলেও তা সামান্য।
এদিকে খুব বেশি যানজট না থাকায় ভোগান্তি কমেছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। তারা বলছেন, সকাল থেকে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর যানবাহনের চাপ কমেছে। তবুও যানজট থেকে সাধারণ মানুষদের স্বস্তি সড়কে রয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের এয়ারপোর্ট জোনের সার্জেন্ট আসাদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সড়কে একটু যানজটের চাপ ছিল। তবে শনিবার সেই রকম যানজট দেখা যায়নি। মানুষ ভোগান্তি আর যানজট ছাড়াই গন্তব্যে যেতে পারছে না। আমরা সড়কে আছি, যেন মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে এটা নিশ্চিতকরণে।”