“২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করহার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তবে অতিধনী এবং ধনীদের কাছে যদি ন্যায্য কর আদায় করা সম্ভব না হয়, তবে এই বাজেটের কর কাঠামো ন্যায্যতা ভিত্তিক হবে না। তাছাড়া এই প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের বিষয়টিও নিন্দনীয়।”
শনিবার (৮ জুন) মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ‘বাজেট পর্যালোচনা ২০২৪-২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির রিসার্চ ডিরেক্টর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা।
সেলিম রায়হান আরও বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে করহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। তবে আমরা এটাও জানি, যারা অতিধনী এবং ধনী রয়েছেন তারা বিভিন্ন কারণে কর না দিয়ে এড়িয়ে যান। বিভিন্ন কারণ বলতে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, তারা প্রভাবশালী ইত্যাদি। এমন ব্যক্তিরা যে পরিমাণ যৌক্তিক কর দেওয়ার কথা, তা যদি আদায় করা সম্ভব না হয় তবে বাজেটের কর কাঠামো ঠিক থাকবে না।”
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার জন্য যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর হয়েছে তা মোটেও ঠিক হয় নি দাবি করে সেলিম রায়হান তীব্র নিন্দা জানান। বলেন, “এর মাধ্যমে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হবে। তাছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে কর কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। কারণ, কর ফাঁকি দিয়ে অনেকেই কালো টাকা অর্জন করতে উৎসাহী হবেন। তারা জানবেন কালো টাকাও সাদা করা যায়। আমরা আশা করি কালো টাকা সাদা করার ১৫ শতাংশ ভ্যাটের বিষয়টি মাননীয় সাংসদরা বাতিল করবেন।”
বাজেট পর্যালোচনায় সানেমের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, “ফরেন রিজার্ভ যেভাবে কমছে, তাতে আমদানি সক্ষমতাও ক্রমান্বয়ে কমছে। মুদ্রা বিনিমিয়ের জায়গাটুকু বাজারভিত্তিক না হওয়ার কারণে খেসারতও দিতে হচ্ছে।”
ঋণ নিয়ে করা মেগা প্রকল্পের জরিপ হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে সেলিম রায়হান বলেন, “এর মাধ্যমে বোঝা যাবে ঋণগুলো কতটুকু এবং কীভাবে ব্যবহার হয়েছে। ঋণনির্ভর এসব প্রকল্প থেকে যেন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা, ঋণ পরিশোধ করতে হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। তা না হলে ঋণের বোঝা বাড়বে।”