দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৫০টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সহজ জয় পেতে যাচ্ছেন। এসব আসনে নৌকার মাঝিদের স্বস্তিতে আছেন। যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়ন বাতিল হওয়াসহ নানা কারণে এসব আসনে তাদেরকে দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলা করতে হবে।
ঢাকা- ১২ আসনে প্রার্থী এবার ৬ জন। তারা প্রতিনিধিত্ব করছেন ৬টি দলের। এই আসনে নৌকার প্রার্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয় পার্টি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ভোট পান ৭৯৫টি। আর আসাদুজ্জামান খান কামাল পান ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৫টি। এবার এই আসনে আছেন জাতীয় পার্টির নতুন মুখ।
ঢাকা- ৯ আসনে নৌকার প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনএফ ও এনপিপি ও জাতীয় পার্টি ও তৃণমূল বিএনপিসহ ৯টি দলের নয়জন প্রার্থী। সর্বশেষ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ভোট পান ২ লাখ ২৪ হাজার ২৩০টি। বিএনএফ পায় ১৪৪ আর এনপিপি পায় ১৪৬টি ভোট।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এটা ঠিক যে বড় একটি রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নিচ্ছে না। তবে আমার প্রচার কিংবা কমিটমেন্টে কোনো ঘাটতি নেই। অতীতে আমি যেভাবে নির্বাচন করেছি, সেভাবেই এই নির্বাচন করছি।
এই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী আবুল খায়ের বলেন, প্রায় ২০ হাজারের মতো আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এটার প্রমাণসহ আমি অভিযোগও করেছি।
তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী রুবিনা আক্তার বলেন, পোস্টার লাগিয়ে আসি। কিন্তু সকালে গিয়ে দেখি, সেই পোস্টার আর থাকে না।
একই অবস্থা বরিশাল-১ আসনেও। দীর্ঘদিন ধরে এই আসনটি নিজের করে রেখেছেন আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাই প্রচারে উৎসবের আমেজ থাকলেও নেই ভোটের উত্তাপ।
আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এখাবে সার্বিকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভালোভাবেই চলছে। অন্যান্য প্রার্থীরাও নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। আমরাও চালাচ্ছি। এখানে কোনো সংঘাত নেই। আশা করি, সুন্দরভাবেই ভোটগ্রহণ হবে।
অতীতের ভোটের ইতিহাস বলছে ঢাকার ৪, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২, ১৫, ১৬ ও ১৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তেমন কোনো ভোট ছিল না। এবারও বেশির ভাগ ভোটারই জানেন না আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া আর কোন প্রার্থীরা এখানে নির্বাচন করছেন।
ঢাকা- ১৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, এখানে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আছে ৭ জন। তাদের মধ্য থেকে শুধু একজনকে আমি চিনি। বাকিদের চিনি না। তারা এই এলাকায় বসবাস করে কিনা, সেটাও জানি না।
ঢাকা- ১৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বলেন, গত ১৫ বছরে মানুষে যে প্রত্যাশা আমি পূরণ করেছি, তারাই বলছেন যেটা চিন্তায়ও ছিল না, সেটাই তারা পেয়েছেন।
পঞ্চগড়- ২, নীলফামারী- ৪, নওগাঁ, রংপুর, সিলেট-১, বরিশাল, রাজশাহী, ঝালকাঠি, জামালপুর, শেরপুর, চাঁদপুর ও কুমিল্লার একাধিক আসনেও প্রায় একই চিত্র। যেখানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপরীতে জমজমাট লড়াই করার মতো কোনো প্রার্থী নেই। তাই আসনগুলোতে অনেকটা সহজ জয়ের অপেক্ষায় নৌকার প্রার্থীরা।
যাচাই-বাছাই ও আপিল নিষ্পত্তি শেষে ১৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, সারা দেশে ২৭টি রাজনৈতিক দলের মোট ১ হাজার ৯০০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন তারা। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।