রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসছেন নতুন নতুন রোগী। বাড়তি রোগী সামালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।
বুধবার (২৬ জুলাই) মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দিতে হাসপাতালটিতে খোলা হয়েছে বিশেষ ইউনিট। এরপরও অনেক রোগী মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের বারান্দা, করিডোর কোথাও পা রাখার জায়গা নেই। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা সেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন সুমন মিয়া। তার বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সাতদিন আগে আমার ভাইয়ের পেট ব্যথা, শরীর ব্যথা, বমি হচ্ছিল। খাবার খেলে বমি করত, সঙ্গে প্রচণ্ড জ্বর। তার প্লাটিলেট ১৫ হাজারে নেমেছিল। এখন প্লাটিলেট ৫৭ হাজার। আজ ছাড়পত্র পেতে পারি। দূর থেকে এসেছি, সেবাও পেয়েছি। এখন আমার ভাই অনেকটা সুস্থ।“
হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা ওয়ার্ডে কথা হয় তাসকিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এর আগে আমার দুই ছেলের ডেঙ্গু হয়েছিল। ওরা সুস্থ হওয়ার পর আমার জ্বর হলো। ডেঙ্গু চিকিৎসায় এই এক মাসে আমার ২৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে।”
হাসপাতালের সিনিয়র নার্স সোনালী রাণী বলেন, “পরিচালক স্যার সব রোগীকে উত্তম সেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রোগীর চাপ বেশি, এরপরও আমরা সবাইকে সমান সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। জুরাইন-মুগদা-বাসাবো-সবুজবাগ এলাকার রোগী আমাদের হাসপাতালে বেশি আসছে। এসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও বেশি। আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য চারটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।”
মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নিয়াতুজ্জামান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমাদের হাসপাতালে হাজারের বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন রোগী আসছে। রোগীর চাপ বাড়ায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে, আমাদের চিকিৎসক ও নার্সদের মনোবল ভাঙেনি। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সবাইকে সেবা দিতে পারছি।”
তিনি আরও বলেন, “ডেঙ্গুর চাপ সামলাতে বাড়তি নার্স ও চিকিৎসকও দেওয়া হয়েছে মুগদা হাসপাতালে। তবুও পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না।”