ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ইনসিডেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেছে, “কোনো ধরনের নীতিমালা না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে ডেমরার ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় ভয়াবহ আগুন লাগা ভবনটি। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস দেখতে পেয়েছে, ভবনটিতে নেই ফায়ার এক্সিট, ভেতরে ঢোকার সিঁড়িও খুবই সংকীর্ণ। পাশের অন্য ভবন থেকে পানি দেওয়ার সুব্যবস্থাও নেই, কারণ ভবনগুলো সব লাগোয়া। শুধু তাই নয় ভবনটির নিচে নেই নিজস্ব কোনো ওয়াটার রিজার্ভ।”
শুক্রবার (২২ মার্চ)সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে আগুনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেন, “এখানকার ভবনগুলো পাশাপাশি, ঘন ঘন ও লাগোয়াভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। যেটি এখন জ্বলছে তার ঠিক পূর্ব পাশের ভবনটিও লাগোয়া। একই দেয়াল, এক ইঞ্চিও ফাঁকা নাই। যে কারণে আমরা ভবনটির পূর্ব পাশ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি দেওয়াসহ কোনো কাজই করতে পারতেছি না।”
তিনি বলেন, ৪ তলা ভবনের পুরোটাতেই রয়েছে খেলাধুলার সামগ্রী। ভবনটিতে মানা হয়নি স্টোরেজ (গুদাম) নীতিমালা। যার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের চেষ্টায় আগুন আর নতুন করে ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই। ভবনটিতে পানির রিজার্ভ ট্যাংক নেই, পাশাপাশি সিড়িও বেশ সংকীর্ণ বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। বলেন, আশপাশে পানি না থাকায় ড্রেনের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। ঢাকা ওয়াসাও পানি দিচ্ছে। আগুন লাগা ভবনটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশের দুপাশ লাগানো রয়েছে আরও ভবন। এজন্য ভবনে ঢুকতেও সমস্যা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কোনো ব্যর্থতা নেই জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের কাঠামোগত শক্তি কমে গেছে। কয়েক জায়গায় ছাদ ফেটে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কত সময় লাগতে পারে এমন প্রশ্নে রেজাউল করিম বলেন, পানির সোর্স না থাকায় সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগতে পারে। পুরো ভবনে দাহ্য পদার্থ আছে, খেলাধুলার সামগ্রী বেশি। প্লাস্টিকের পরিমাণও বেশি। সব ফ্লোরেই আগুন আছে।
ভবন বা গুদামের মালিকপক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা। বলেন, মালিকদের খোঁজার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৫মিনিটের দিকে ভবনের তিনতলায় গোডাউনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে বাকি ইউনিটগুলো যোগ দেয়। কাছাকাছি পানি না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নৌ বাহিনীর সদস্যরাও।