আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধে রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহন কমেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা মহানগরের যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড ও ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার, পল্টন, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, মহাখালী, বনানী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস হলেও বাস স্টপেজ ও মূল সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা রয়েছে। মোটরসাইকেল, সিএনজি চলাচল বেশি হলেও প্রাইভেটকার ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচলও কম।
জানা যায়, তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কায় সড়কে বাস নামাননি পরিবহন মালিকরা।
রাজধানীর নীলক্ষেতে বাসের জন্য এক ঘণ্টা অপেক্ষায় ছিলেন ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, জরুরি কাজে ফার্মগেট যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় বাসের অপেক্ষায় থেকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়ে ফার্মগেট আসেন তিনি।
ডেমরা নুরুল ইসলাম কোনাপাড়া থেকে বংশালের উদ্দেশ্য সকাল ১০টায় রওনা হন বাসা থেকে। কিন্তু গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে রওনা হন তিনি। নুরুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এমন রাজনীতি আমরা চাই না। যেই রাজনীতি আমাগোর মতো সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করে।”
মোহাম্মপুরগামী যাত্রী সাজ্জাদ মিয়া বলেন, “আমার অফিস তেজগাঁও সাত রাস্তায এলাকায়। অফিস থেকে বের হওয়ার পর দুই ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে সেখান থেকে ফার্মগেট খামার বাড়ি পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। এখন পর্যন্ত কোনো বাসের দেখা পাইনি।”
হানিফ তালুকদার ব্যাবসা করেন ফামগেইটে। সকাল ৯ টায় সাইনবোর্ড থেকে রওনা দেন ফার্মগেইটের উদ্দেশ্য। কিন্তু রাস্তায় গাড়ী না পেয়ে বাসায় ফিরে যান তিনি।
ফার্মগেট মোড়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা নাজমুল হাসান জানান, একদিকে অবরোধ, অন্যদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সবমিলিয়ে রাস্তায় গাড়ি কম। বাসমালিকরা আতঙ্কে বাস বের করেননি। বাস না থাকায় এখন বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশায় যেতে হবে।
এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চ। অর্ধদিবস হরতাল চলছে বাম গণতান্ত্রিক জোটেরও। র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা সতর্ক টহলে রয়েছে।
তফসিল প্রত্যাখ্যান করে আগামী রোববার ও সোমবার (১৯ ও ২০ নভেম্বর) ২ দিন হরতাল পালন করবে বিএনপি।