• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকে তারল্য সংকট, কমছে ঋণ বিতরণ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম
ব্যাংকে তারল্য সংকট, কমছে ঋণ বিতরণ
ফাইল ছবি

অর্থনৈতিক মন্দা এবং চলমান তারল্য সংকটের কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (সিএমএসএমই)) ঋণ বিতরণ কমেছে ১১,৫৪৩ কোটি টাকা বা ১৯.০৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই খাতে ৪৯,০৬৮ কোট টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যা আগের অক্টোবর ডিসেম্বর প্রান্তিকে ছিল ৬০,৬১১ কোটি টাকা।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সার্বিক আমদানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় এই খাতে ঋণ বিতরণ কমে গেছে। যদিও মার্চ ও জুন প্রান্তিকে সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ কম থাকে। পরবর্তী দুই প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যাংকগুলো ঋণ বেশি বিতরণ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণ কমেছে ২,৬৪৮ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংগুলো এই খাতের ২,৮৯,৩৪৭ জন উদ্যোক্তাক ৫১,৭১৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল।

রাজধানীর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী শাহাদাৎ হোসেন জানান, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে অনেকটা লড়াই করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ক্রেতাদের কাছে আমাদের পণ্যের অনেক চাহিদা রয়েছে, কিন্তু পণ্যের যোগান কম থাকায় গত তিনমাস ধরে আমাদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। এক কোটি টাকা ঋণের জন্য ব্যাংকে ২০ বারও যেতে হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছে। চেয়ে নিচ্ছে নানা ধরনের কাগজপত্র।’

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন ধীর গতিতে চলছে। আমাদের দেশেরও একই অবস্থা, যার কারণে সার্বিকভাবে ঋণ বিতরণ কমেছে।

সিএমএসএমই খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। যে কারণে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। বিতরণ কম হওয়ার এটিও একটি বড় কারণ বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

এদিকে, মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ও ব্যাংকে তারল্যের যোগান দিতে গত বছরের জুলাইয়ে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ খাতে ৩ বছরের জন্য ২৫,০০০ কোটি টাকার রিফাইন্যান্স ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরের জুলাইয়ের ১০ তারিখ পর্যন্ত ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৪,০০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। তবে আমাদের টার্গেট ছিল আরও বেশি ঋণ বিতরণ করা। আশা করি ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরো ঋণ বিতরণ হবে।

যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই স্কীমের মেয়াদ ৩ বছরের জন্য নির্ধারিত করেছে; তবে প্রয়োজনে এর মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই স্কীম থেকে ২ শতাংশ হারে তহবিল নিতে পারে ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ হারে গ্রাহকের কাছে ঋণ বিতরণ করতে পারে।

ঋণ বিতরণ কম হওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই বিভাগের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ব্যাংগুলোর এসএমই খাতে ঋণ কম বিতরণের আরেকটি কারণ হলো এখানে ইন্টারেস্ট কম এবং অপারেটিং কস্ট বেশি।

তবে চলতি জুলাই মাস থেকে সিএমএসএমই অপারেটিং কস্ট হিসেবে অতিরিক্ত ১ শতাংশ ইন্টারেস্ট গ্রহণ করতে পারবে। যার ফলে ঋণের গ্রোথ বাড়বে।

 

Link copied!