রাজধানীর দয়াগঞ্জ, পুরান ঢাকার এক ব্যস্ত এলাকা। এলাকার প্রধান সড়কটির বেহাল দশা অনেক দিনের। সড়কটির এবড়োথেবড়ো খানাখন্দগুলো চলাচলের নিত্যদুর্ভোগ। এখানকার বাতাস তো ধূলোর কুণ্ডলি, যেখানে দম নেওয়াও দায় হয়ে যায় অনেক সময়। আবার বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে একাকার। সড়কটির বেশির ভাগ অংশেরই বেহালদশা। এবড়োখেবড়ো খানাখন্দ সড়কটিকে চলাচলের অনুপযোগি করে ফেলেছে।
স্থানীয়রা জানান, চৌরাস্তা মৌড়ে ট্রেনসেতু নির্মাণের কাজ শুরুর পর থেকে এই দুর্ভোগ। সামান্য বৃষ্টিতেও দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। সামান্য বৃষ্টিতেও কোমর সমান পানি ওঠে এ সড়কে। কয়েক বছর ধরে এই দুর্ভোগ সঙ্গী করে বসবাস করছেন এলাকাবাসী। কবে সংস্কার হবে তাও জানে না কেউ।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী মোড় হয়ে দয়াগঞ্জ চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। এসব গর্তের মধ্যে বাস ট্রাকসহ ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন পড়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নতুন করে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কের পিচ উঠে তৈরি হয়েছে আরও নতুন বড় বড় গর্ত। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমেনা বেগম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “রেল লাইনের কাজ চলছে দুই বছর ধরে। কিন্তু পথচারীদের জন্য বিকল্প রাস্তা করে নাই। হাঁটার জন্য বিকল্প রাস্তা না হোক অন্তত কাঁদা ও বড় বড় গর্তের দুর্ভোগ থেকেও যদি মুক্তি পেতাম তাহলে আমাদের কষ্ট অনেক কমে হতো।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কাশেম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দুই বছর ধরে দেখছি এই রাস্তার বেহাল দশা। বৃষ্টি হলে কোমর পরিমাণ পানি জমে যায়। প্রতিদিন গর্ত গুলোতে রিকশা ভ্যান উল্টে যায়। এই সড়ক দিয়ে মাওয়াসহ দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক চলাচল করে। অনেক সময় মালবোঝাই ট্রাক খাদে পড়ে যায়। তখন এমনও হয় সারাদিন যানজট লেগে থাকে।”
দয়াগঞ্জ চৌরাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে রাইদা পরিবহন। এই বাসের এক চালক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সড়কের যে অবস্থা, যানবাহন চালানোর মতো পরিবেশ নেই। ড্রাইভিং পেশায় আছি বলে বাধ্য হয়ে খানাখন্দ সড়ক দিয়ে বাস-ট্রাক-লরি চালাই। ভাঙ্গা সড়কে হেলে-ঢুলে গাড়ি চলে। চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হয়। গাড়ি উল্টে গিয়ে ছোট কোনো গাড়ি বা পথচারীর ওপর পড়লে আমাদেরই মারে। ”
দয়াগঞ্জের আরেক বাসিন্দা মোরশেদুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এই সড়ক দিয়ে ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন জেলার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বৃষ্টি হলেই সড়কে কাদাপানির মাখামাখি। আর বৃষ্টি না হলে ধুলাবালিতে হাঁটা যায় না। এ ছাড়া রেললাইনের পশ্চিম পাশের সড়কটি খুঁড়ে রাখায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে ”
রাজধানীর অন্যতম এবং প্রধান সড়ক হওয়ায় গাড়ির চাপ বেশি থাকে এই সড়কে। মেরামতের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দয়াগঞ্জ সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। এখানে রেল লাইনের কাজ শেষ হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দিবে। তখন সড়ক ও ড্রেনের কাজ নতুন করে শুরু হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন একটি লেন দিয়ে গাড়ি চলছে সড়কে। আরেকটি লেন হলে সমস্যা কমে যাবে। রেল লাইনের কাজ শেষ হলে আশা করি মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে।