কোরবানি ঈদের জন্য সবজি কিনতে রাজধানীর কারওয়ান কাঁচাবাজারে গিয়ে বিব্রত হচ্ছেন ক্রেতারা। সালাদ তৈরির অন্যতম প্রধান উপকরণ শসার দেখা মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে শসা দেখা গেলেও সেগুলো সবই হাইব্রিড জাতের। আর দেশি জাতের শসা যেন বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।
একটি দোকানে চোখে পড়ল দেশি জাতের শসা। তবে মান ভালো নয় মোটেই। বিক্রিতা হাঁকলেন, কেজি ১২০ টাকা। শুনেই ভিমড়ি খাওয়ার জোগার এক ক্রেতার। দাম কমানো যাবে কিনা এমন প্রশ্ন করতেই দোকানি সাফ বলে দিলেন, “একদাম। পছন্দ হলে নিতে পারেন। না হলে নাই।” আশপাশের আর কোনো দোকানে দেখা গেল না কোনো জাতেরই শসা।
তবে হাইব্রিড জাতের শসার দাম অনেকটা কম। কেউ চাচ্ছেন ৮০ টাকা কেজি, কেউ আবার দাম কমিয়ে বলছেন, ৬০-৭০ টাকা। দেখতে বেশ মোটাসোটা হলেও এসব শসার স্বাদ দেশি জাতের চেয়ে কম। ফলে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের পাশেই ডেকে ডেকে কাঁচামরিচ বিক্রি করেন কয়েকজন ক্রেতা। তবে দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের হাঁকডাক থেমে গেছে। এমনিতেই ক্রেতাদের ভিড়। তবে আগে যারা আড়াইশ কিংবা ৫০০ গ্রাম কিনতেন এখন তারা কমিয়ে দিয়েছেন।
ক্রেতারা জানালেন, কাঁচা মরিচের কেজি এখন ৩০০ টাকায় উঠে গেছে। বিক্রেতারা কারো কথা কানে নিচ্ছে না। একদাম করে ফেলেছেন। এই ফাঁকে এক তরুণ ক্রেতা এসে দোকানির কাছে ১০ টাকার মরিচ চাইলেন। দোকানি অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, দশ টাকার মরিচ নেই। এতে ক্ষেপে গেলেন ক্রেতা।
তরুণটি বললেন, কেন ১০ টাকার মরিচ দেওয়া যাবে না? যা হয় তাই দিবেন। দেওয়া যাবে এটা কেমন কথা। দোকানি বললেন, কেজি ৩০০ টাকা। ১০ টাকার মরিচ কীভাবে দেব। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল তর্কবিতর্ক শুরু হয়ে গেল। ক্রেতা বললেন, তোমাকে দিতেই হবে, ১০ টাকার যে কয়টা মরিচ পাওয়া যাবে সেই কয়টাই কিনব। তর্কাতর্কির মাঝখানে জমে গেছে মানুষ। তুমুল বাকবিতণ্ডা অনেকক্ষণ ধরে।
ঈদুল আজহার আগের দিন রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজি আর নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে বিব্রত হচ্ছেন বেশিরভাগ ক্রেতা। প্রতিটি সবজি আর পণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো কোনটির দাম দ্বিগুণ, তিনগুণ বেড়েছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের এক সবজি বিক্রেতা বললেন, দিন দুয়েক আগে বৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর ঈদে গাড়িভাড়া বেড়েছে, সঙ্গে সরবরাহও কম। ফলে মরিচ, শসাসহ অন্যান্য সবজির দাম হুট করেই বেড়ে গেছে। কয়েকদিন আগেই পাইকারিতে এক পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচামরিচ কিনতাম ৮০০ টাকায়। আর এখন সেই দাম পড়ছে ১১০০ টাকা পর্যন্ত।
এক ক্রেতা বললেন, ঈদে শসার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ঈদ এলেই এমন ঘটনা ঘটায়। অভিযোগ করে লাভ হয় না। সব সময় পকেট কাটে ক্রেতার, আর লাভ গোনে ব্যবসায়ীরা।