দুর্নীতিবাজদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, “বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বভাবজাত দূরদর্শিতায় উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে ‘দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে না পারলে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে না।’ আজকে আমি বলব, দুর্নীতিবাজদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে।”
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে দুদক।
ওবায়দুল হাসান বলেন, “আমরা সেই জাতি, যারা অন্যায়-অবিচার, দুঃশাসন-অপশাসন, বৈষম্য-জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছি। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেও জয়লাভ করতে পারব, ইনশা আল্লাহ। প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ধারণ করে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ করে দুর্নীতিবাজদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।”
প্রধান বিচারপতি বলেন, “দুর্নীতির মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দেশের সব জেলায় বিশেষ জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক বেঞ্চ দুর্নীতি দমন আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলাগুলো শুনানি করছেন। তাই প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি যে দেশের অধস্তন আদালত ও উচ্চআদালতে দুর্নীতির মামলাগুলো যথাশিগগির নিষ্পত্তিতে বিচার বিভাগ সচেষ্ট।”
ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির বিকাশের কারণে দুর্নীতির ধরন ও পদ্ধতিও পাল্টেছে। তাই বর্তমান বাস্তবতায় দুদকের সামনে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ বিরাজমান। এ কারণে দুদককে দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে শুধু গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় মামলা-মোকদ্দমা নয়; বরং আন্ডারকভার অপারেশন, সার্ভিলেন্স, কোভার্ট ইনভেস্টিগেশন, মামলা পরিচালনায় আধুনিকীকরণ, রেকর্ড ব্যবস্থাপনা যুগোপযোগীকরণ, পুনরুদ্ধার করা সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনীমূলক কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগ নিতে হবে। তবে এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে দুদক কর্তৃক মামলা যেমন আগের তুলনায় বেড়েছে, তেমনই মামলায় সাজার হারও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, সভাপতিত্ব করেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ।