• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শীতে ঠান্ডা গরম কাপড়ের বাজার


মো. মির হোসেন সরকার
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম
শীতে ঠান্ডা গরম কাপড়ের বাজার
এখনও জমেনি শীতের পোশাকের বাজার

রাজধানীতে শীতের তীব্রতা অনুভব না হলেও গাঁ-গেরামে জেঁকে বসেছে শীত। শিশির ভেজা সকাল-সন্ধ্যায় চিতই পিঠার উৎসবই বলে দেয় নগরীতে শীতের আমেজের কথা। গরম ধোঁয়ায় চায়ের কাপ আর মন মাতানো সিঙ্গারার স্বাদে দলবেঁধে বসে গল্প আড্ডায় নগরবাসী হালকা শীতে আনন্দ খুঁজলেও বিপরীতে মন ভালো নেই কাপড় ব্যবসায়ীদের। তারা শীতের কাপড় বিক্রি করতে পারলেও গরমের পাতলা কাপড় চাহিদা মতো বিক্রি করতে না পারায় লোকসান গুনছেন অনেকে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কাপড় বিক্রির যে লক্ষ্য ছিল সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সাধারণ মানুষের পকেটে টাকা না থাকায় অধিকাংশ মানুষই এবার ফুটপাত কিংবা ছোট মার্কেট থেকে কাপড় কিনে চাহিদা পূরণ করেছে। বড় বড় মার্কেটে যেটুকু কাপড়ের ব্যবসা হয়েছে তা আশাপ্রদ নয়।

উত্তরার রাজলক্ষীতে অবস্থিত কুশল সেন্টারের এক কাপড় ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এবারে চাহিদা মতো গরমের পোশাক বিক্রি হয়নি। এরইমধ্যে শীতের কাপড়ে সয়লাব হয়েছে বাজার। গরম কাপড় টুকটাক বেচাকেনা হলেও অধিকাংশ কাপড়ই বস্তাবন্দি করে রাখতে হয়েছে। কিছু করার নেই। মানুষ এখন মার্কেটে এসে শুধু শীতের কাপড় খোঁজে।”

তিনি আরও বলেন, “কাপড়ের ব্যবসায় আমরা এবার যে আশা করেছিলাম সেই আশা পূরণ হয়নি। লোকসান হয়েছে বলা যায়। তবে শীতের কাপড়ের ব্যবসা ভালো না গেলে পুরাই ধরা খাইতে হবে।”

রাজধানীর গুলিস্তানে বেশ কয়েকটি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক দোকানের সামনে সব বয়সীদের শীতের কাপড় ঝোলানো আছে। কাপড় কিনতে সাধারণ মানুষ ভিড় করলেও এখন পুরোপুরি জমে উঠেনি বাজার। তবে আর একটু শীত পড়লে বেচাকেনা জমবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

অপু নামের এক কাপড়ের ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ঢাকায় এখনো সেই পরিমাণ শীত নামেনি। যেটুকু হালকা শীত অনুভব হয় তা কিছুই নয়। আমরা আশা করছি পুরোপুরি শীত নামলে এবার কাপড়ের ব্যবসা ভালো জমবে।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষ এখন মার্কেটে শীতের নতুন কাপড় কোনটা এসেছে সেগুলো দেখতে আসে। দু’একজন কাপড় কিনলেও অনেকেই মার্কেট ঘুরে চলে যায়। এরপর আবার অবরোধের কারণে ঢাকার বাইরের ক্রেতারা ঢাকায় পৌঁছতে পারছেন না।”

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুলিস্তান কাপড়ের মার্কেটে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইব্রাহিম শেখ। কয়েক দিন পর তারা বাড়ি যাবেন। এজন্য ঢাকা থেকেই কাপড় কিনবেন। সহধর্মিণীর ও ছেলে-মেয়ের কাপড় কিনলেও নিজের কাপড় পছন্দ না হওয়ায় কিনবেন না বলে সিন্ধান্ত নেন তিনি। তবে সহধর্মিণীর কথায় একটি কাপড় কেনার সিন্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

ইব্রাহিম শেখ-এর সাথে কথা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “প্রথমে কাপড় পছন্দ না হওয়ায় কিনব না বলে সিন্ধান্ত নেই। তবে সহধর্মিণীর কথায় একটি কাপড় কিনতে হলো। যদিও এখনও পুরোপুরি শীত ঢাকায় নেই। কয়েক দিন পর বাড়ি যাবো এজন্য কাপড় কিনতে হলো।”

তিনি আরও বলেন, “শীত শুরু না হতেই মার্কেটে এসে দেখি এবার কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি। গতবার যে কাপড় ১২০০ টাকায় কিনেছি এবার সেই এক রকমের কাপড় ১৫০০-১৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পুরোপুরি শীত নামলে মনে হয় কাপড়ের দাম আরও বাড়বে।”

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গরমের কাপড় মানুষ এবার কম কিনেছে। পকেটে টাকা না থাকলে মানুষ কিনবে কী। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। সব জিনিসের দাম বেশি। এ পরিস্থিতি মানুষ কিভাবে পোশাক কিনবে। শীতেও যদি কাপড়ের দাম বাড়ে আর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে শীতেও মানুষ চাহিদা মতো কাপড় কিনবে না বলে আমার মনে হয়।”

Link copied!