চিকিৎসক দেখাতে ঢাকায় এসেছিলেন প্রায় ৬৫ বছর বয়সী আম্বিয়া বেগম ও তার বোন। সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী এক নাতি। ডাক্তার দেখানো শেষে সকালের ট্রেনে চড়ে বসেন নরসিংদী যাবে বলে। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে বসে আছেন তেজগাঁও রেলস্টেশনে। কারণ মহাখালীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের ডাকা সড়ক অবরোধের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ। ট্রেনে টয়লেট ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় টয়লেট ও নামাজ পড়া নিয়ে চিন্তিত তারা।
২১ নভেম্বর ঢাকার মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা। যার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ। তেজগাঁও স্টেশনে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ঢাকা থেকে আখাউড়াগামী ট্রেন।
ট্রেনকে নিরাপদ বাহন মনে করে চেপে বসেছিলেন এক মা। কোলে পাঁচ মাস বয়সী শিশু। অঝোরে কাঁদছে শিশুটি। মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিরাপদ ভেবে ট্রেনে উঠলেও সন্তানকে নিয়ে এখন তিনি বিপদে আছেন। গরমে অস্থির হয়ে শিশু কাঁদছে। আবার একই জায়গায় ট্রেন থেমে থাকায় লোকজনের আনাগোনা বেশি। এতে শিশুকে বুকের দুধও খাওয়াতে পারছেন না। গরম ও ক্ষুধা দুই মিলিয়ে শিশুকে নিয়ে বিপাকে এই মা।
যেখানে এই সময়ের মধ্যে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার কথা সেখানে এখনো ঢাকা ছাড়তে পারেননি বলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। শামীম নামের এক যাত্রী বলেন, শ্বশুর অসুস্থ তাই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে তাকে দেখতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে এখানেই বসে আছি। কারও কোনো দাবি থাকতেই পারে, তাই বলে রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার কোনো মানে হয় না। এটা দ্রুত সরকারের দেখা উচিত বলে মনে করেন এই যাত্রী।
জরুরি কাজে বাড়ি যাচ্ছিলেন মুক্তা। কিন্তু ঢাকাতেই আটকা পড়ে বিপাকে আছেন তিনি। তাকে আজ বাড়ি যেতেই হবে। এ সময় তিনি বলেন, ট্রেন থেকে নেমে বাসে করে যে বাড়ি যাব, তার তো কোনো ভরসা পাই না। বাসে গেলে যে কোনো গ্যাঞ্জাম হবে না, জ্যাম হবে না, তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আন্দোলন হলেই রাস্তায় নেমে রাস্তা অবরোধ করে জনগনকে ভোগান্তিতে ফেলা অনুচিত বলে মনে করেন যাত্রীরা। এই ভাবে মানুষকে ভোগান্তিতে না ফেলে তাদের যা দাবি তা যেন অন্য পন্থায় জনগণকে কোনো সমস্যায় না ফেলে সরকারের কাছে পৌঁছায় এমনটা প্রত্যাশা রফিকের।