রাজধানীর উত্তরায় ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় উত্তরার জমজম টাওয়ারের মোড় ও ১১নং সেক্টর মাইলস্টোনের সামনে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীদের গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুরো উত্তরা এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত নিরাপত্তা ছিল। মিছিলের একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশকে ফাঁকা গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা যায়।
এর আগে এদিন সকালে উত্তরা মডেল কলেজের সামনে জড়ো হতে থাকলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই ভরে গেল প্রতিষ্ঠানটির সামনের সড়ক। ছাত্র হত্যার বিচারের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন তারা। কিন্তু সেখানে কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরে পুলিশ তাদের আন্দোলন দমানোর জন্য গুলি চালিয়ে নির্বিচার হত্যা করে অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে। হত্যাকাণ্ডের পর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। তারা যেকোনো মূল্যে এ ধরনের অন্যায় বন্ধের দাবি জানান।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “কী দোষ ছিল আমার ভাই মুগ্ধের, কী দোষ ছিল ওই শিশু মেয়েটির, যে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল? কীই-বা দোষে এতগুলো নিরীহ মানুষ মরল! কেন নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হলো। আমরা এই প্রতিটি হত্যার বিচার চাই।”
সাজ্জাদ আরও বলেন, “আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী। কিন্তু আমি পড়ায় মনোযোগ দিতে পারছি না। কারণ, পুলিশ আমার সহপাঠী ভাইকে (অন্যান্য এইচএসসি পরীক্ষার্থী) কোনো প্রকার অপরাধ ছাড়া ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা আমাদের ভাইকে জেলে রেখে আর কোনো পরীক্ষায় বসতে পারব না।”