• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সিআইডি পরিচয়ে সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০১:৪১ পিএম
সিআইডি পরিচয়ে সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার ভাড়াবাসা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় পুলিশ বলছে, তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।  

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোর ৪টার দিকে তিনটি গাড়িতে মোট ১৬ জন শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাদের মধ্যে ৭-৮ জন বাসায় ঢোকেন। একজন শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুইটি মোবাইলফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। বাসায় ১০-১৫ মিনিট অবস্থান করার পর তাকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান তারা। বটতলার নূরজাহান হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তা প্রহরী ও শামসুজ্জামানসহ মোট ১৯ জন ব্যক্তি সেহেরি করেন। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বটতলা থেকে তারা আবার শামসুজ্জামানের বাসায় যান।

দ্বিতীয়বার বাসায় যাওয়ার সময় আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় খবর পেয়ে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

ওই সাংবাদিক জানান, শামসুজ্জামানের বাসায় এসে জব্দ করা মালামালের তালিকা করেন সিআইডির পরিচয়ে আসা ব্যক্তিরা। এ সময় শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলা হয়। কক্ষের ভেতরে দাঁড় করিয়ে তার ছবিও তোলা হয়। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে আবার তারা বের হয়ে যান। বাসা তল্লাশির সময় দুবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।

তুলে নেওয়ার সময় ওই বাসার মালিককে ডাকেন একজন। তাকে জানানো হয়, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বাসার মালিক ফেরদৌস আলম বলেন, “আনুমানিক ভোর ৪টায় কেউ একজন বাসার কলিং বেল বাজান। এ সময় নিচে নামলাম। তখন তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন শামস এ বাসায় থাকেন কিনা? বললাম, হ্যাঁ এখানে থাকেন। এরপর গেট খুলে তাদের ভেতরে আসতে দিই। এ সময় তারা ছয়-সাত জন সদস্য ছিলেন। তাদের একজন পুলিশের পোশাক পরা ছিলেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানান, তার করা রিপোর্ট নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। আমি আর কিছু বলিনি। এরপর তার কক্ষে থাকা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো জব্দ করে তাকে নিয়ে যায় তারা।”

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের সঙ্গে কথা বলে প্রথম আলো। তিনি গণমাধ্যমটিকে বলেন, “আমি আগে বিষয়টি জানতাম না। রাত দেড়টার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শামসুজ্জামানের ভাবী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সেই পরিচয় দিয়ে তাঁরা আমাকে শামসুজ্জামানের বাসায় নিয়ে যান।”

এ বিষয়ে শামসের ভাবী রাজধানীর হলি আর্টিজান হামলায় নিহত পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার রবিউলের স্ত্রী উম্মে ইসলাম বলেন, “কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। কী কারণে তাকে নিয়ে গেছে, কী তার অপরাধ কিছুই জানি না। গতকালও শামসুজ্জামানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তখনও এ বিষয়ে শামসুজ্জামান আমাকে কিছু বলেনি।”

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডল জানান, সিআইডি ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তবে কাকে নিয়ে গেছে বা কেন নিয়ে গেছে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

Link copied!