ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা দুই আসামিকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আসামি ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে সাজি ও মোস্তাফিজুর রহমান ফকিরকে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) তাদের প্রথমে আদালতে হাজির করে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আতাউল্লাহ আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামি ফয়সাল ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে আনারকে অচেতন করেন। আর মুস্তাফিজ তাকে বিবস্ত্র করে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
এর আগে মূল ঘাতক আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, আনার হত্যাকাণ্ডে আসামি ফয়সাল ও মুস্তাফিজ জড়িত। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের অপরাধের জন্য দায়ী অন্যদের হদিস খুঁজে বের করার জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়া দরকার।
শুনানির এসময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার (২৬ জুন) মামলার পলাতক এ দুই আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল। দুপুর থেকে হেলিকপ্টারে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করানোর জন্য যান ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। উঠেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। পরেরদিন কারও একজনের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে ওই বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচ দিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজিম নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন।
পরে কলকাতা পুলিশ জানায়, ১৩ মে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হয়েছেন এই সংসদ সদস্য। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ। এ ঘটনায় ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।