ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, “তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করব। তিস্তা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। আমরা এখনও বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।”
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কূটনীতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডি ক্যাব আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মিয়ানমারে যুদ্ধ থামাতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে চীন-যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ উন্মুক্ত করবে এ কথা জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, “দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। কিন্তু যত জটিলই হোক, আমরা চেষ্টা করে যাব যুদ্ধবিরতি আনার। যুদ্ধবিরতি না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন। আমরা আরাকান আর্মির সঙ্গেও কথা বলেছি এ বিষয়ে। আরাকান আর্মিসহ সব আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তৃতীয়পক্ষীয় আলোচনা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এটিকে আমরা বন্ধ বলতে চাই না। এটাও নিশ্চিত নই যে, কবে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে, গৃহযুদ্ধ থামে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দ্বার উন্মুক্ত হয় বলেও জানান তিনি।
ইয়াও ওয়েন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কৃষি সহযোগিতা, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, ডিজিটাল ইকোনোমি, শিক্ষা, গণমাধ্যমের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে। আবার রোহিঙ্গা সংকট আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “এ নদী বাংলাদেশের নদী। অতএব তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করব। তিস্তা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। আমরা এখনও বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেটা সম্পন্ন করি। যে পক্ষই এ প্রকল্পে কাজ করুক, দ্রুত শেষ হোক সেটা আমরা চাই। উত্তরের সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক সেটা আমরা চাই। আর তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি আছে চীন।”
চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে দেখে চীন। এ ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন চলতে থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ডলার। আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চীনের দৃষ্টিভঙ্গি একই। ফলে আমাদের সম্পর্কের একটি কমন জায়গা রয়েছে।