রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় থাকেন অভি। নগরীর কারওয়ান বাজারে এসেছেন মুরগি কিনতে। কিন্তু ১৫ মিনিট ধরে ঘুরেও কিনতে পারেন নি। শুধু অভিই নন, একই অবস্থা সত্যজিতেরও। তিনিও মুরগির দামের সঙ্গে নিজের বাজেট মেলাতে পারছেন না।
অভি বলেন, “ব্রয়লার মুরগি কিনবো বলে বাজারে এসেছি। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ১০ টা দোকান ঘুরলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিনতে পারিনি। মুরগি দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি চায় ২১০ টাকা। এর আগে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা মধ্যে পাওয়া যেত।”
আর সত্যজিৎ বাড়ি ফেরার কথা জানিয়ে বলেন, “এক কেজি ওজনের ওপরে একটি সোনালি মুরগি কিনব। কিন্তু ওই সাইজের (আকার) পাচ্ছি না। আর দামটাও বেশি। এখন বাড়ি ফিরতে হবে।”
বাজারে আসা এই দুইজন ক্রেতার মতো অনেকেই বলছেন, আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে মুরগির দাম। তাদের অভিযোগ, শুধু মুরগি নয়, বাজার জুড়ে সব ধরনের পণ্যতেই লেগেছে মূল্য বৃদ্ধির হাওয়া।
শুক্রবার (১০ মে) নগরীর এই বৃহৎ বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে মুরগির দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫০ টাকার ওপরে। এ দিন বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২১০ টাকায়। এছাড়াও প্রতি কেজি লেয়ার ৩৪০ টাকা, সোনালি ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা এবং পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়।
এর আগে গত সপ্তাহে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। পাশাপাশি লেয়ার ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা, সোনালি ৩৭০ থেকে ৩৮০ এবং পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৪০ টাকা।
যদিও দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিক্রেতারা পালটা অভিযোগের তীর খামারিদের দিকে। তাদের ভাষ্য মতে, মুরগির লালন-পালনের খরচ বাড়ায় খামারিরা বাড়িয়েছে মুরগির দাম।
সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, “বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ছে। শুধু মানুষের দাম বাড়েনি। এসব দেখার কেউ নেই। সরকারও দেখে না, মানুষেরও মনুষ্যত্ব নেই। বিশেষ করে দোকানিদের।”
অভিষেক কুমার নামের আরেক মুরগি ক্রেতা বলেন, “বাজার অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে। কোনো মনিটরিং নেই। সুষ্ঠু মনিটরিং হলে বাজারে সব জিনিসের দাম কমে আসবে।”
খামারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মুরগি বিক্রেতা আমির বলেন, “আমরা দুই চার টাকা লাভের ব্যবসায়ী। বেশি দামে কেনা হলে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। এখন মুরগির খাবারের দাম বেশি। তাছাড়া রোদ-গরমে মুরগি মরছে। এ জন্য অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বাজারে দামটা বাড়তি।”
শাহেদ নামের আরেক মুরগি ক্রেতা বলেন, “মুরগির দাম বাড়ছে একটু। কেন বাড়ছে জানি না। আমরা খামার থেকে নিয়ে আসছি। ওরাই জানে কেন মুরগির দাম বাড়ছে।”