মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবারও নীতি সুদহার বা রেপো রেট এক লাফে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন নীতি সুদহার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। ফলে নতুন নীতি সুদহার হবে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) থেকে নতুন সুদহার কার্যকর হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৬ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, গত ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে পলিসি রেট তথা ওভারনাইট রেপো সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএসএফ) সুদহার বিদ্যমান ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
একইভাবে নীতি সুদহার করিডরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) সুদহার বিদ্যমান ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য সব ধরনের নীতি সুদহার আবারও বাড়ানো হয়েছে। ফলে বাড়বে আমানত ও ঋণের সুদহারও। নীতি সুদহার বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছিল।
বর্তমানে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিলের ওপর ভিত্তি করে সুদহার নির্ধারিত হয়। প্রতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ হার জানিয়ে দেয়। এতোদিন ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে পরবর্তী মাসের ঋণের সুদহার নির্ধারণ হয়ে আসছিল। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে এখন ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে অর্থাৎ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে।
গত অক্টোবরে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদ (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে চলতি মাস নভেম্বর ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। সে হিসাবে ঋণের সুদ হবে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। নভেম্বরে ঠিক করা ঋণের সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুল রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে পুনর্গঠিত মনিটারি পলিসি কমিটি (এমপিসি) এর প্রথম সভা হয়।
সভায় অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিকসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি, বিনিময় হার, তারল্য ও সুদহার পরিস্থিতি এবং নীতি সুদহারের গতিবিধি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সভায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং ব্যাংকিং খাতে ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের সমস্যা মোকাবিলার বিষয়গুলো উঠে আসে।