• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জীবিত স্বামীকে গণঅভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনার নামে মামলা


সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৮:৩৬ এএম
জীবিত স্বামীকে গণঅভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনার নামে মামলা
আল-আমিন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে স্বামী আল-আমিন নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে মামলা করেন কুলসুম নামে এক গৃহবধূ। এ ঘটনার তিন মাস পর তার স্বামী থানায় এসে জানান, তার অজান্তে স্ত্রী তাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার আশুলিয়ায়।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম তার স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। পরে এটি ৮ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়।

মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুছ ছালাম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ আছে।

মামলার বাদী কুলসুম বেগম স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়েছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার স্বল্প সিংজুরী বাংগালা গ্রামে। বর্তমান ঠিকানা দেখিয়েছেন আশুলিয়ার জামগড়া। এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট সকালে তার স্বামী মো. আল আমিন মিয়া (৩৪) ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিকেল ৪টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বিজয়মিছিলে তিনিও ছিলেন। তবে পরাজয় মেনে না নিতে পেরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বিচার গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার স্বামী নিহত হন।

এজাহারে আরও বলা হয়, ৬ আগস্ট আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে আল-আমিনের স্ত্রী কুলসুম জানতে পারেন, অনেক লাশ গোসল করিয়ে জানাজা পড়িয়ে আশুলিয়ার দরগাপাড় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সেখানে কুলসুম গিয়ে ডকুমেন্ট, ছবি এবং ভিডিও দেখে তার স্বামী আল-আমিনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। এর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কুলসুমকে বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার প্রসঙ্গে আল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, “৫ আগস্ট সে (স্ত্রী) আমার সঙ্গে সিলেটেই ছিল। এর তিন-চার দিন পর ঝগড়া করে মানিকগঞ্জে চলে যায়। এরপর আর তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। তিন-চার দিন আগে একজনের কাছ থেকে জানতে পারি, আমি ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) আন্দোলনে মারা গেছি উল্লেখ করে সে একটা মামলা করছে। ওই মামলার একজন আসামি আমাকে ফোন দিয়া ঘটনাটি বলছে। এটা জানার পর আমি দক্ষিণ সুরমা থানায় গেছি। একটা জিডি করছি, ওসির সঙ্গে পরামর্শ করছি। এরপর ওইখান থেকে আজকে আমাকে আশুলিয়া থানায় পাঠিয়ে দিছে।”

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে নিহত দেখিয়ে একজনের স্ত্রী হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা হেফাজতে রেখেছি। তাকে জবানবন্দির জন্য বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতে তোলা হবে। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Link copied!