ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধভাবে ৭২ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগে এই মামলাটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. রুহল হক বাদী হায়ে মামলাটি করেন।
গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কামরুন নাহার এক আদেশে অবৈধ প্রক্রিয়ার ৭২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রধান করে অপরাধমূলক অসদাচরণ করে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল এক আদেশ অবৈধ প্রক্রিয়া শুরু করে ৭২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেছেন। অথচ কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এডহক কমিটি কোনো শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবে না। তারপরও কামরুন নাহার নোটিশ বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে একক স্বাক্ষরে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেছেন। ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এজাহারে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবসর গ্রহণ করার কারণে নতুন করে এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্য পদে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হয় অস্থায়ীভাবে। স্কুল ফান্ড থেকে তাদের যাবতীয় বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। এই অস্থায়ী নিয়োগ প্রাপ্তদের অব্যাহতি প্রদান বা পরবর্তীতে এনটিআরসির মাধ্যমে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের কোনো ধরনের ব্যবস্থা কামরুন নাহার নিজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন বা স্কুল কর্তৃপক্ষ অদ্যাবধি গ্রহণ করেননি। যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের কোনো ধরনের লিখিত পরীক্ষা বা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র অল্প কয়েকজনের ডেমোলট্রেশন ক্লাস নেওয়া হয়েছিল। স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে নামমাত্র একটি নিয়োগ কমিটি করে এই কমিটির মাধ্যমে শুধু প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই করে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এসব নিয়োগ দিয়েছেন।
পরবর্তীতে এসব শিক্ষক কর্মচারীর বেতন প্রদান নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করেছেন। এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্যপদে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে, কোনো প্রকারের জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে, কোনো লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে, অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে শুধুমাত্র শিক্ষাগত সনদ যাচাইয়ের মাধ্যমে একক আদেশে মোট ৭২ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।