• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘পেঁয়াজ কিনলে মাছ হয় না, সবজি কিনলে পেঁয়াজ হয় না’


বিজন কুমার
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম
‘পেঁয়াজ কিনলে মাছ হয় না, সবজি কিনলে পেঁয়াজ হয় না’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রতা ও ক্রেতারা। ছবি-সংবাদ প্রকাশ

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার সুমন ইসলাম। সারাদিনের কাজ শেষে কম দামে বাজার করবেন বলে সন্ধ্যা ৬ টায় আসেন কারওয়ান বাজারে। বাজারের শুরুতে ঘুরেছেন মাছের দোকান। কিন্তু মাছ খেতে হলে দরকার পেঁয়াজের।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের দোকানে কথা হয় সুমন ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, “সারাদিন কাজ শেষে বাজার করতে এসে কিছুই কিনতে পারছি না। মাছের দোকানে দাম বেশি। মাছ রান্না করতে হলে পেঁয়াজের দরকার। পেঁয়াজের দাম শুনে মাথা ঘোরায়। সন্ধ্যায় এসে ১ ঘণ্টা ধরে বাজার ঘুরলাম। কিছুই কিনতে পারিনি। পেঁয়াজ কিনলে মাছ হয় না, সবজি কিনলে পেঁয়াজ হয় না। যতটুকু কিনবো মনে করে আসছি, তা পারছি না কিনতে। কারওয়ান বাজারেই পেঁয়াজ যদি ৯০ টাকা হয়। বাইরে এই পেঁয়াজ কিনতে হয় ১০০ টাকায়।”

এমন আক্ষেপ শুধু সুমন ইসলামের নয়। বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতাদের। পেঁয়াজের এই দাম সব ক্রেতাদেরই নাভিশ্বাস তুলছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি তিন ধরনের পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ রয়েছে। এরমধ্যে একটি রাজশাহী ও অপর দুটি ফরিদপুর আর পাবনার। বাজারে খুচরা প্রতি কেজি রাজশাহীর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ফরিদপুরের ৭৫ ও পাবনার পেঁয়াজ ৯০ টাকা। আর প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের খুচরা দাম ৬৫ টাকা।

অপরদিকে, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি রাজশাহীর পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, ফরিদপুরের ৭০ টাকা ও পাবনার পেঁয়াজ ৮৫ টাকা। আর প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৬২ টাকা। 

বিক্রেতারা বলছেন, গত ১৫ দিন ধরেই পেঁয়াজের বাজারের চিত্র অস্থির। এ কারণে বাজারে ক্রেতা কম।

আলী নামে এক পেঁয়াজ ক্রেতা বলেন, “বাজারে অনেক আগে আসছি। কিছুই কিনতে পারছি না। সবকিছুর দাম বেশি। সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বাড়িতে দুই ছেলে, স্ত্রী, আমি। একজনের আয় দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হয়। পেঁয়াজটা সবসময় লাগে। হঠাৎ গত কয়েকদিন থেকে পেঁয়াজের দাম বেশি।”

জীবন নামে এক ক্রেতা বলেন, “নিম্নবিত্তদের জন্য এখন পেঁয়াজ খাওয়া খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেঁয়াজের দামটা নিয়ন্ত্রণে থাকা দরকার। যাদের আয় ভালো তাদের কিছু মনে না হলেও কম আয়ের মানুষদের অবস্থা খারাপ।”  

আব্দুস সামাদ নামে এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, “বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই প্রশ্ন করে। আমাদের কিছুই করার নেই। যা কিনি (ক্রয়) তার সঙ্গে দুই টাকা লাভ নিয়ে ছেড়ে দেই। মাসের শুরুতে ক্রেতা বেশি থাকে। কিন্তু বাজারে দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা কম।”

মানিক নাকে এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, “এই বাজারে ৯০ টাকা বিক্রি হলে বাইরে তা ১০০ টাকা উঠেছে। গত ১৫ দিন ধরেই বাজার এমন চলছে। পাবনার পেঁয়াজের দাম একটু বেশি। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম একটু কমেছে।”

Link copied!