রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন ভাঙচুরের পর ধানমণ্ডি ৫ নম্বর সড়কে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে উত্তেজিত জনতা ভবনটিতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর সুধা সদন পুরোপুরি খালি ছিল। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুধা সদনে আগুনের খবর পান তারা।
রাত ১২টার দিকে ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বিভিন্ন কক্ষে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
এদিকে এক্সকেভেটর দিয়ে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। রাত সাড়ে ১১টায় বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়। এর আগে রাত ৯টার দিকে ভবনটির তৃতীয় তলায় আগুন দেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ১০টায় প্রথমে বাড়ির সামনে একটি ক্রেন নেওয়া হয়। পরে আরেকটি এক্সকেভেটর আনা হয়। বাড়ির একপাশে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
ক্রেন নিয়ে যাওয়া হলে উৎসুক জনতাকে ক্রেনের ওপর ওঠে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। এ সময়ে ‘শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। কেউ কেউ শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়েও স্লোগান দেন।
ওই এলাকায় দায়িত্বরত ধানমন্ডি সোসাইটির নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার পর ১০ থেকে ১২টি ছেলে এসে সুধা সদনে আগুন দেয়। আগুন ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লোকেরা এসে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আশপাশের ভবনের বাসিন্দারা এসে পানি দিয়ে নিচতলার আগুন কিছুটা কমিয়েছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া শেখ হাসিনা বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভাষণ দেন। একে কেন্দ্র করে বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি। পরে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমিমুক্ত হবে।’
এরপর রাত ৮টার দিকে বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা বাড়িটির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে ওই ভবনে আগুন দেওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে এক্সকাভেটর ও ক্রেন দিয়ে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়।