বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মাত্র ছয় মাসেই সরকারি ‘গোয়েন্দা ব্যয়’ খাতে দেড় কোটি টাকার মতো খরচ করেছেন। এ টাকা তিনি কোন খাতে ব্যয় করেছেন, তার কাছে সেই হিসাব চেয়েছে বিটিআরসি।
জানা গেছে, ১৪ ডিসেম্বর বিটিআরসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। এর আট মাসের মাথায় রাজেনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে ১৪ আগস্ট পদত্যাগ করেন তিনি। একসময় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষস্থানীয় পদধারী ছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে প্রথম আলো জানায়, সরকারের জেনারেল ফাইন্যান্সিয়াল রুলসে ‘সিক্রেট সার্ভিস এক্সপেন্ডিচার’ বলে উল্লেখিত ব্যয়কে সাধারণত গোয়েন্দা ব্যয় বলা হয়। মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার এ ধরনের ব্যয়ের খাত থাকে। সাধারণত সোর্স ফান্ড হিসেবে এ খাত রাখা হয়।
টেলিযোগাযোগ সেবা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিরও এ ধরনের একটি খাত রয়েছে, যা মূলত বাজেটের থোক বরাদ্দ থেকে আসে। বিটিআরসি সূত্র জানায়, মনিটরিং, গোয়েন্দা সেবা ও সোর্স মানি (তথ্যের বিনিময়ে সোর্সকে দেওয়া অর্থ) খাতে এ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সাধারণত সংস্থার চেয়ারম্যান এ অর্থ ব্যয় করে থাকেন। বছরে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন তিনি।
মহিউদ্দিন আহমেদ যখন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন, তখন গোয়েন্দা খাতের অ্যাকাউন্টে টাকা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ১৩ হাজার টাকার বেশি। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার হিড়িক শুরু হয় মহিউদ্দিন আহমেদের সময়কালে। গত ৪ জানুয়ারি তিনি ২৫ লাখ টাকা তোলেন। এরপর গত ১২ জুন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার বেশি এ খাত থেকে ব্যয় করেন।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, সাধারণত এ খাতের ব্যয়ে সংস্থাটির অর্থ ও রাজস্ব বিভাগের কারও স্বাক্ষর রাখা হয়। কিন্তু মহিউদ্দিন আহমেদ তা করেননি। পাশাপাশি ওই অর্থ কোথায় ব্যয় করেছেন, সেটাও বিটিআরসিকে জানাননি।
এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মহিউদ্দিন আহমেদের কাছে অর্থ ব্যয়ের প্রত্যয়ন সার্টিফিকেট চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি। তাতে বলা হয়েছে, এ খাতে অর্থ ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। বিটিআরসির বার্ষিক অর্থবিবরণী প্রস্তুত করার জন্য সিক্রেট সার্ভিস এক্সপেন্ডিচারের আর্থিক লেনদেন হিসাবভুক্ত করতে হবে।