পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ওই চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেওয়া অন্যপক্ষ। এতে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে মতিঝিলের মেট্রো স্টেশনের নিচে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
আহতরা হলেন- শ্রেষ্ঠা রূপাইয়া (২৪), ইসাবা শুহরাত (২৫), রেংইয়ং ম্রো (২৭), ফুটন্ত চাকমা, ধনজেত্রা (২৮), অনন্ত ধামায়, ডিবিসির সাংবাদিক জুয়েল মার্ক (৩৫), শৈলী (২৭), দনওয়াই ম্রো (২৪) ও তনিচিরাং (৩০)। তাদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা যায়, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পেছনের প্রচ্ছদে আদিবাসী লেখা গ্রাফিতি বাতিল ও বহাল নিয়ে দুপক্ষই এনসিটিবি ঘেরাও করে রাখে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানব ব্যারিকেড ভেঙে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে আসা একদল লোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয় ঘেরাও করার উদ্দেশে রওনা হয়। পরে এনসিটিবি ভবনের সামনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির ব্যানারে থাকা লোকজনের সঙ্গে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।
সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার মিছিলটি মেট্রো স্টেশনের নিচে পৌঁছালে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির সদস্যরা প্রথমে তাদের বাধা দেন। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ভ্যান-রিকশায় করে সরিয়ে নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খিসা জানান, এটা ‘মব’ বাহিনীর হামলা। তারা আগে থেকেই সেখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছিল তারা।
নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ থাকা একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এর প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি। এরপর সরকার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পাঠ্যবইয়ের পিডিএফ সংস্করণ থেকে সেটি সরিয়ে নতুন একটি গ্রাফিতি সংযুক্ত করা হয়।