• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বৃক্ষমেলায় নজর কাড়ছে বনসাই


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম
বৃক্ষমেলায় নজর কাড়ছে বনসাই
বৃক্ষমেলার বনসাই। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

গাছে গাছে ঝুলছে হরেক রকমে ফল। ফুলে ফুলে ভরে গেছে চারপাশ। শুধু তাই নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ, ঔষধি নানা গাছের সমারোহ। তবে সবকিছু থাকলেও সবার নজর আম, বটসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট আকৃতির বনসাইয়ের দিকে।

বুধবার (২৬ জুন) সরেজমিনে ঢাকার আগারগাঁওয়ে মাস ব্যাপী বৃক্ষমেলায় দেখা গেছে এই চিত্র। এদিন দেখা যায়, অন্যান্য গাছের তুলনায় বনসাই একটু ব্যতিক্রম হওয়ায়, বৃক্ষপ্রেমী কিংবা দর্শনার্থীরা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকছেন বনসাইয়ের দিকে। যদিও বনসাইয়ের ক্রেতা কম, তবে এক পলক বনসাইয়ের রূপ দেখতে যেন ছাড় দিচ্ছেন তারা। যাদের বয়স একেকটির প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছরের বেশি।

মেলা ঘুরে জানা গেছে, এ বছর প্রায় ১০০টির মতো প্রতিষ্ঠান তাদের গাছ নিয়ে এসেছে মেলায়। এখানে রয়েছে হরেক রকমের ফলজ, বনজ, ঔষধি, ক্যাকটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আর মেলায় আসা অধিকাংশ বনসাইয়ে দেশের বাইরে থেকে আনা। এর মধ্যে রয়েছে আম, দেশি বট, চায়না বট, পাকুর, কাঠগোলাপ, এডিনিয়াম, জেট প্ল্যান্ট, অ্যারাবিকাম, খেজুর, বাওবাব, গোলাপ জামসহ বিভিন্ন প্রজাতির বনসাই।

মেলা ঘুরে কথা হয় হয় বেশ কয়েক জন নার্সারির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে। তাদের মতে, একটি বনসাই প্রস্তুত হতে ন্যূনতম সময় প্রয়োজন ৫ বছর। বয়স আর গাছে প্রজাতি হিসাবে দাম নির্ধারণ হয় এসব গাছের। আর দাম প্রকারভেদে লাখ টাকার ওপরে। ফলে এসব গাছের ক্রেতা অধিকাংশই বিত্তশালী।

এদিকে, দর্শনার্থী ও গাছপ্রেমীদের দাবি, বনসাইয়ের দাম বেশি হওয়ায় অধিকাংশই তারা কিনছেন ফলন গাছ।

রাজধানীর আদাবর থেকে সামসুন নাহার নামের এক নারীকে দেখা যায় আমের বনসাই দেখতে। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, “বৃক্ষমেলায় এসেছি খুব ভালো লাগছে। বনসাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুব ভালোবাসি। আমার বাড়িতে বনসাই করেছিলাম। কিন্তু ভাড়া বাড়িতে থাকি তাই গাছগুলো আনতে পারিনি। বনসাই অনেক মূল্যবান গাছ। এটি শোভা বর্ধন করে। এখানে যেসব গাছ এসেছে তার অধিকাংশই বিদেশি। দেশি বনসাইয়ের দাম আরও বেশি হয়। এ জন্য মেলায় ফলজ গাছই এবার বেশি কিনেছি।”

সাখাওয়াত নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, “বনসাই দেখতে অনেক ভালো লাগে। এগুলো বাড়িতে শোভা বর্ধন করে। কিন্তু দাম এতো বেশি যে, সাধারণ মানুষের ক্রেতার ক্ষমতা খুবই কম। ছোট বনসাই আছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। সেগুলোতে আবার কিনতে মন চায় না।”

কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির ব্যবস্থাপক খন্দকার হাবিবুল্লাহ বলেন, “বনসাই এ বছর বেশি কয়েক প্রজাতির নিয়ে এসেছি। দাম লাখ টাকার ওপরেও আছে। আবার তিন হাজারের মধ্যেও আছে। বনসাইয়ের বাজার ভালো নয়। বেশি বিক্রি হচ্ছে ফলের গাছ। মেলা তো আরও কিছু দিন আছে দেখা যাক। বনসাইগুলো চায়না, থাইল্যান্ড ভারত থেকে আনা।”

মেহেদি হাসান নামের একজন পরিচর্যাকারী বলেন, “একটা বসাইয়ের বয়স ৪০ বছর। চার হাত ঘুরে তারপরে আমাদের কাছে এসেছে। এর দাম ১৩ লাখ টাকা। যাদের অনেক বেশি টাকা তারাই এসব কেনেন। ফলজ গাছ বেশি বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা শুক্রবার আর শনিবার বেশি হয়।”

সামাজিক বন বিভাগের ঢাকার সোস্যাল ফরেস্ট্রি জোনের সহকারী বন সংরক্ষক ব্রজগোপাল রাজবংশী বলেন, “বেশিরভাগ বনসাই এখন দেশের বাইরে থেকে আসে। দেশি বনসাইও কিছু এসেছে। এগুলোর দাম মোটামুটি বেশি। ক্রেতা কেমন তা সম্পর্কে বলা অনেক বেশি। তবে মেলায় এ বছর প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার গাছ বিক্রি হচ্ছে।”

Link copied!