বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা একটি জাতীয় সরকার গঠন করব। যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করা হবে।”
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা চাই, এই সরকার সাফল্য অর্জন করুক। তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হব। আমরা চাই না শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক।”
খালেদা জিয়ার সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করল, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। কেন পারলাম না? এটা তো সত্য? ১৫ বছর লড়াই সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে।”
বিএনপির অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা– মন্তব্য করে দলের মহাসচিব বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। রাজনীতি একটি বিজ্ঞান, এজন্যই তো বলা হয় পলিটিক্যাল সায়েন্স। বিএনপি কি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না। দ্রুত নির্বাচন দিলে দেশের অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।”
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে তথ্য ছিল না? তারা কি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আগে নিতে পারতেন না? আসলে সরকার এখনো স্টেবল হতে পারেনি। তাই বলছি নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোডম্যাপ ঘোষণা দেন। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন দাবি করে তিনি আরও বলেন, “অনেকে বলাবলি করছে এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে। সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই, যেকোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষা খাতে, বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটির মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটি সিরিয়ালে আসে না। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।