বিএনপির যুগ্মমহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, “জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘ যে সিদ্ধান্তগুলো দিয়েছে, যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এটি সংরক্ষিত রাখতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিষয়টি জানানোর জন্য পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবেদনটি লিপিবদ্ধ করতে হবে। সেটি দ্রুত করতে হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি এ দাবি জানাই। যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেটি করতে ব্যর্থ হয়। তাহলে আপনাদের কথা দিচ্ছি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করলে। আমরা পাঠ্যবইতে জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের করা প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করব। কারণ, জাতিসংঘের লেখাগুলো, প্রস্তাবগুলো একটি দালিলিক প্রমাণ। ঐতিহাসিক দলিল। যেন যুগের পর যুগ ছাত্র-জনতা হাসিনা ও তার দলের অপকর্ম সম্পর্কে জানতে পারে।”
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার মানবাধিকার লঙ্গন করেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। ক্ষমতা টিকে রাখার জন্য হাসিনা বছরের পর বছর হাজার হাজার মানুষকে গুম, খুন, হত্যা ও নির্যাতন করেছে। জাতিসংঘ শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে।”
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমানের নাম বই থেকে বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতার ঘোষক সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছিল হাসিনা সরকার। প্রকৃত তথ্য জানতে দেওয়া হয়নি। পাঠ্যবইয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও স্কুল সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) জয় বাংলা মুখস্থ করার চেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু ছাত্ররা হাসিনার গুম, খুন ও অপকর্মের ফলে তাকে মনে রাখে নাই। তার হাসিনার পাশে দাঁড়ায়নি। উল্টো আন্দোলন করে ক্ষমতা নয় দেশ থেকে তাড়িয়েছে।”
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি আরও বলেন, “বর্তমান প্রজন্ম যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছে, তা অনুভব করার মতো। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার পরও তারা পিছপা হয়নি। হেলিকপ্টার থেকে টার্গেট করে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও অভিভাবকরা ছিল। দেশের সাধারণ মানুষের গণআন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য উপর্যুপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরাসরি নির্দেশ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে খুন করা হয়েছে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মুরাদ হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান চৌধুরী মিন্টু, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন ও বিদ্যালয়ের আজীবন সদস্য আলমগীর হোসেন রাজু।