ব্যাংকে আমানতের ওপর বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই এখন থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতের সুদহার নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) ২০২২–২৩ অর্থ বছরের জানুয়ারি-জুন শেষ ছয় মাসের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ বলেন, “বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলো। এছাড়া ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানো হবে।”
বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি যেখানে উঠেছে, তাতে ব্যাংকগুলোকে আমানতের সুদহারও বাড়াতে হয়। কিন্তু ঋণের সুদ নির্ধারিত থাকায় ঋণ ও আমানতের সুদের মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়ছে। এ জন্য আমানত ও সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি জানিয়ে আসেছিল।
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বলা হয়, ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। এখন সেখানে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়াতে পারবে।
তবে শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, অন্যান্য ঋণের বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকবে।
আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে।
২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়ার পর আমানতের সুদহার আড়াই শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালের আগস্টে আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, তিন মাস ও তার বেশি মেয়াদি আমানতের সুদ কোনোভাবেই তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতির কম হতে পারবে না।