নতুন রূপে আসছে বঙ্গবাজার। ফিরবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে। নাম পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান’। শনিবার (২৫ মে) সকাল ১১টায় ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১.৭৯ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে ১০ তলা ভবন। প্রতিটি দোকান হবে ৮০ থেকে ১০০ স্কয়ার ফুট। ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনের সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এই বিপণিবিতানের নির্মাণকাজ ২০২৮ সালে শেষ হতে পারে।
গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজার। অগ্নিকাণ্ডে নিজেদের সব হারিয়ে পথে বসেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পারলেও টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৩০৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। পরবর্তী সময়ে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ফাঁকা স্থানে ছোট ছোট চৌকি বসিয়ে কোনোমতে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থায় সেই পুরাতন বঙ্গবাজারকে আধুনিক বহুতল বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপ দিতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র আবু নাছের বলেন, ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে সংগঠিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নতুন করে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান’ নির্মাণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সম্ভাব্য ব্যয় ধরেছে ৩৩৮ কোটি টাকা। ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর ও বেজমেন্ট ছাড়াও থাকবে মোট আটটি ফ্লোর। ১.৭৯ একর জায়গার ওপর নির্মিত হতে যাওয়া বহুতল ভবনে থাকবে তিন হাজার ৪২টি দোকান। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ স্কয়ার ফুট। ভবনটিতে থাকবে আটটি লিফট, এর মধ্যে চারটি থাকবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য। আর বাকি চারটি কার্গো লিফট থাকবে মালামাল ওঠা-নামানোর জন্য।
এছাড়া থাকবে গাড়ি পার্কিং, খাবারের দোকান, সমিতির অফিস, নিরাপত্তা কর্মী এবং সেখানকার কর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা। এর আগে তিনটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এ ভবন নির্মাণের জন্য নকশা প্রণয়ন করে।
ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক এ ভবনে থাকবে বেজমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোর। গ্রাউন্ড ফ্লোরে মোট ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি ও সপ্তম তলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে।
এছাড়া অষ্টম তলায় দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হবে। ভবনের পার্কিংয়ে একসঙ্গে প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। ভবনটিতে ২২টি খাবারের দোকান রাখা হবে। সেইসঙ্গে নকশায় আরও ৮১টির বেশি দোকান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ স্কয়ার ফুট।