• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বঙ্গবন্ধু আমার চিবুক ধরে আদর করেছেন : নাসির উদ্দীন ইউসুফ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩, ০৮:৪৩ পিএম
বঙ্গবন্ধু আমার চিবুক ধরে আদর করেছেন : নাসির উদ্দীন ইউসুফ
ছবি : সংগৃহীত

১৯৯৫ সালের ১৫ আগস্টে সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। এ ঘটনায় দেশের বুকে নেমে আসে এক শোকের ইতিহাস। তবে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও এ দেশ থেকে তাঁকে মুছে দিতে পারেনি কেউ। বঙ্গবন্ধু সবার স্মৃতিতে অম্লান। চির অমর হয়ে আছে বাঙালির হৃদয়ে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যাঁকে কেউ ভুলতে পারে না। বিশেষ করে যাদের সঙ্গে তাঁর স্মৃতি জড়িত তারা এসময় যেন আরো বেশি আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। এমনি একজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। তিনি একাধারে নাট্য নির্দেশক, চলচ্চিত্র পরিচালক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তবে, তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের পর যখন বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরলেন, সেসময়ে নাসির উদ্দীন ইউসুফের দেখা করার সুযোগ হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার যে স্মৃতি, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন।

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পর যখন অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা আসে, তখন আমি বলেছিলাম আমি বঙ্গবন্ধুর কাছে জমা দেবো। তখন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার দেখা করার সুযোগ হয়। পুরাতন গণভবনে আমরা সাড়ে চারশো মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত হই এবং আমি অনেকের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তরের কমান্ডার হিসেবে তাঁর হাতে অস্ত্রটা জমা দেই। তখন তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমাকে বললেন, ‘আচ্ছা তুই এতো হালকা পাতলা মানুষ হয়েও ৬/৭ ফুট লম্বা মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করে কীভাবে তাদের পরাজিত করলি?’ তখন আমি বললাম এখানে দুইটা জিনিস কাজ করেছে। একটা হলো দেশপ্রেম, আরেকটা আপনার অনুপ্রেরণা। আপনি যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবে আমরা যুদ্ধ করেছি। আমাদের অনেকেই মারা গেছেন। আমরা কিছু ফিরে এসেছি। তখন বঙ্গবন্ধু আমার চিবুক ধরে আদর করেছেন এবং আমার কাঁধে হাত দিয়ে সবুজ লনটাতে কিছুক্ষণ হাঁটলেন। সেই পনেরো মিনিটের সাক্ষাৎ আমার জীবনে খুব গুরত্বপূর্ণ বলে মনে করি।”

এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর নানা অবদান। এমনকি যুদ্ধের আগে দেশের বিভিন্ন খারাপ সময়ের তাঁর অবদানের কথা তুলে ধরে নাসির উদ্দীন বলেন, “যখন দেশে ৫০ এর মনন্তর ঘটে তখন তো দেশে অনেক অভাব। সেসময় তিনি তাঁর লোকজন সঙ্গে নিয়ে যারা গুদামে খাদ্য লুকিয়ে রেখে বাজারকে শূন্য করতে চেয়েছিল, সেসব ব্যবসায়ীদের বাধ্য করেছিল খাদ্যগুলো দিয়ে দিতে এবং সে খাদ্য তিনি সবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।”

বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িকতা তুলে ধরে নাসির উদ্দীন ইউসুফ আরও বলেন, “যখন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগে, তখন সোহরাওয়ার্দী সাহেব (হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ) বলেছিলেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে মুসলমানদের আশ্রয় দিতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হিন্দু-মুসলিম সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। অর্থাৎ ছোটবেলা থেকে তাঁর মধ্যে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সমতার ভাবনা ছিল। এই মানুষটির অনেকটা দূরে যাওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু অল্প বয়সেই তো তাঁকে হত্যা করা হলো।” 

Link copied!