এবার ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম বাড়ানো হয়েছে। আগের বছর দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৫০-৫৫ টাকা। চলতি বছরে ৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা।
ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। গত বছর যা ছিল ৪৫-৪৮ টাকা। এ ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ৭ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০-২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চামড়ার দাম আগের বছরের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হলেও দাম পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। গরুর চামড়ার চাহিদা আর বেচাবিক্রি হলেও খাসির চামড়ার চাহিদা নেই একেবারেই। বিক্রি হচ্ছে পানির দামে।
ঈদের দিনে সোমবার (১৭ জুন) লালবাগের পোস্তায় দুপুরের পর থেকেই রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা ট্রাক-ভ্যানে করে চামড়া নিয়ে আসেন। বিকেলে জমে ওঠে চামড়া কেনাবেচা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, চামড়ার দাম এবার কম। গরুর চামড়ার চাহিদা কিছুটা থাকলেও খাসির চামড়া বিক্রি হচ্ছে না।
তথ্য অনুযায়ী, পোস্তায় গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ প্রতি পিস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক ছোট গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে খাসির কাঁচা চামড়ার চাহিদা বা বেচাবিক্রি হতাশাজনক। প্রতি পিস খাসির চামড়া বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।
নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৩৭৫ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাব থেকে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ২৫০ টাকা বাদ দিলে ওই চামড়ার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা।
গত বছর গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭০০-৮৫০ টাকায়। ঢাকার বাইরে দাম ছিল আরও কম। যেমন সিলেটে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায়। বগুড়ার শেরপুরে বিক্রি হয়েছে ৪০০-৫০০ টাকায়।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার গরুর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা। এর পর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে।
২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বড় ধরনের ধস নামে। ন্যূনতম দাম না পেয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে ও মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। এতে প্রায় ২৪২ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়। গত তিন বছর সরকার নির্ধারিত দাম কিছুটা বাড়লেও কোরবানির চামড়া বিক্রি হয়েছে সেই দরের চেয়ে কম দরে।
পোস্তা এলাকার এক আড়তদার জানান, এবার শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রতি পিস চামড়া সংরক্ষণের ব্যয় ৩০০ টাকার ওপরে পড়ে যাবে।