চলমান চার দফা দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি এক দফা দাবিতে নামিয়ে এনে সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে রোববার (৭ জুলাই) রাত ৮টায় সড়ক ছাড়ল আন্দোলনকারীরা। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মূল ব্লকেড আন্দোলন শুরু হবে। একই সময়ে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এই কর্মসূচি শুরু হবে।
রোববার (৭ জুলাই) রাত ৮টায় শাহবাগে প্রথম দিনের ‘বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মূল ব্লকেড আন্দোলন শুরু হবে। একই সময়ে সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও ব্লকেড কর্মসূচি শুরু হবে।
শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো- সব গ্রেডে সব ধরনের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংসদে আইন পাস করতে হবে।
এর আগে দেশব্যাপী বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করতে বিকেল ৩টায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুরো রাজধানীতে তীব্র যানজট সুষ্টি হয়। তাই ভোগান্তি এড়াতে মেট্রোরেলের স্টেশনে অফিসফেরতদের ভিড় করতে দেখা যায়।
কোটা বাতিল ও ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, বাংলামোটর ও কারওয়ান বাজার মোড় অবরোধ করেন। এছাড়া সায়েন্সল্যাব, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত মোড়, চানখারপুলসহ বিভিন্ন সড়ক পয়েন্টে অবরোধের কারণে রাজধানীতে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহন সব স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে গণপরিবহনের মধ্যে মেট্রোরেলের চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এ অবস্থায় অফিসফেরত যাত্রীসহ অন্য সাধারণযাত্রীরাও যাতায়াতের জন্য মেট্রো স্টেশনগুলোতে ভিড় জমান। হঠাৎ অনেকবেশি যাত্রীর ভিড়ে মেট্রো স্টেশনগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচিও পালন করছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা৷
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করলে গত ৫ জুন সরকারি পরিপত্রটিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর সেটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল থাকে। এরপর থেকেই এই রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।