ঈদের আগে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে অস্থায়ী চৌকি পেতে বেচাকেনা শুরু করেছেন রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকেই এ কেনাবেচার কাজ শুরু হয়। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন লাগার ৮ দিন পর ইট বালি বিছিয়ে নিচের অংশে চৌকি পেতে দেওয়া হয়েছে। যদিও নেই কোনো ছাউনি, বিদ্যুৎ কিংবা পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। ছাতা হাতে নিয়ে ক্রেতাদের হাকডাক দিতে দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বঙ্গমার্কেটে সিটি করপোরেশনের আগের সিরিয়াল অনুযায়ী দোকান সাজিয়ে বসার নির্দেশনা দিয়েছেন মালিক শ্রমিক নেতারা। যাদের এক থেকে তিনটি দোকান ছিল তারা পাবে একটি চৌকি। যাদের ৩টির বেশি দোকান ছিল তাদের সেই অনুযায়ী চৌকি দেওয়া হয়েছে।
এই ব্যবস্থায় কেউ কেউ খুশি থাকলে অসন্তুষ্ট দেখা যায় অনেক ব্যবসায়ীকে। তীব্র রোদে খোলা আকাশের নিচে ক্রেতা না পাওয়ার শঙ্কা করছেন তারা।
অগ্নিকাণ্ডের সময় দোকান থেকে কোনো কিছু বের করতে পারেননি দাবি করে ২২১৩-১৪নং দোকানের ব্যবসায়ী বলেন, “যে মালগুলো আমার স্টকে ছিল সেগুলো নিয়েই বসেছি। ঈদের আগে যতটুকু পারব বিক্রি করব। তবে এখানে যে গরম, এই গরমে আমাদের বিক্রি করা সম্ভব না। মানুষ এখানে আসবে, মাল কিনবে এ রকম কোনো পরিস্থিতি নেই। ক্রেতারা এসে ঘুরে চলে যায়।”
মো. মাসুম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, “সময় তো প্রায় শেষ। এখন তো আর ওই রকম আশা করা যায় না। গোডাউনে কিছু মাল ছিল, সেগুলো নিয়ে বসেছি। এখন পর্যন্ত বেচতে পারি নাই। কাস্টমার যদি আসে, তাহলে কিছু বিক্রি করতে পারব। সেই আশায় বসে আছি।”
সময় তো শেষ, এই সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না বলে দাবি করেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আফরোজ।
এদিকে, খুব একটা ক্রেতা দেখা না গেলেও কেউ কেউ এসেছেব ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে। অনেকে সাধ্যমতো কেনাকাটা করছেন। এ বিষয়ে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের। তিনি বলেন, “দুইটা জামা নিয়েছি এখান থেকে। দাম ঠিকই আছে। তাদের সঙ্গে যে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারলাম, এটাই বড় কথা।”
এদিকে কিছু ব্যবসায়ী ছাতা হাতে দোকান সাজিয়ে বসলেও এখনো খালি পরে আছে অনেক চৌকি।
এর আগে ৪ এপ্রিল ভোরে বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। এতে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট পুরোপুরি পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৪ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন।