প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার আগে ও পরের সংঘর্ষ-সহিংসতা, হামলায় আরও বহু মানুষ হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবারও (৬ আগস্ট) দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি, দলীয় ও ব্যক্তিগত কার্যালয় এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ তাদের মালিকানাধীন বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা অব্যাহত ছিল। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ নেতাদের মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলাকে কেন্দ্র করে।
সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
এই সহিংসতাগুলোয় রাজধানীর তিনটি হাসপাতাল থেকে আরও ৩৫ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। আর রাজধানীর বাইরে ১৫ জেলায় সংঘর্ষ-সহিংসতায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ৭ জেলায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ মাধ্যম দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ২০, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ এবং উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৫ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে তিনশোর বেশি মানুষ।
সোমবার কারফিউ ভেঙে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ হন আন্দোলনকারীরা। দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরের পরও চলে সংঘর্ষ। এসব সংঘর্ষে আহত ও নিহতদের অনেককেই গতকাল উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতাল থেকে ২০ জন নিহতের তথ্য পাওয়া যায়। তাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ ছিলেন।
সোমবার মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হন রুবেল (১৮) নামে এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন ভাই পারভেজ। এ সময় চিকিৎসক রুবেলকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজধানীর হাতিরঝিল ব্রিজের নিচে পানি থেকে শাহরিয়ার আলম বাপ্পী (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা।
হাসপাতালে খালাতো বোন খালেদা আক্তার পুনম বলেন, ‘সোমবার রাত ১০টার দিকে চা খাইতে বাসা থেকে বের হয় বাপ্পী। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে খবর পাই হাতিরঝিলের পানিতে ভাসছে বাপ্পীর মরদেহ। তার বাম হাতে গুলির চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে, আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে পানিতে পড়ে মারা গেছে।”
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও। সোমবার যাত্রাবাড়ী থানায় হামলার শিকার হয়ে নিহত হন র্যাব-৬-এ কর্মরত বিজিবির ডিএডি মো. আনোয়ার হোসেন। গতকাল দুপুরে ছেলে রাসেল ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
উত্তরা পূর্ব থানায় সোমবার হামলার শিকার হয়ে নিহত হন ডিএমপির ডিবি উত্তর জোনের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম (৪৪)। মঙ্গলবার সকালে ভাগ্নে আলমাস আলী উৎস উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই দিন গাজীপুরের শ্রীপুরে হামলার শিকার হয়ে নিহত হন বিজিবি সদস্য আব্দুল আলিম শেখ (৪৪) এবং সংসদ ভবন এলাকায় হামলার শিকার হয়ে নিহত হন পুলিশের কনস্টেবল মো. মাহফুজুর রহমান (২৮)। এ ছাড়া নিহতদের অনেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, বংশাল, বাড্ডা, উত্তরা, মিরপুর, গুলশান, হাতিরঝিল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিনজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন মারা গেছেন। সবাই গুলিবিদ্ধ ছিলেন।”
আর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গতকাল ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়।
সাভারে নিহত আরও ২৭ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সাভারে আরও ২৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ ছিলেন। বাকিদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং হাবিব ক্লিনিকসহ সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে আশুলিয়ার বাইপাইলের কাছে ফুট ওভারব্রিজে দুজনের লাশ ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে উল্টো করে ঝোলানো দেখতে পাওয়া যায়। মরদেহ দুটি আশুলিয়া থানা পুলিশের দুই সদস্যের বলে জানা গেছে। বাইপাইলে আগুনে পোড়া একটি লেগুনায় তিনটি দগ্ধ লাশ পাওয়া যায়। এ ছাড়া আশুলিয়া থানার সামনে ৭ জন ও আশুলিয়া থানার লাশঘরের সামনে ১ জনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
সাভারে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতার বাসভবন ও কার্যালয় আগুন দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা।
সাতক্ষীরায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিহত ১৪ : সাতক্ষীরায় পৃথক দুটি ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ১০-১২ জন। ঘটনা দুটি ঘটে আশাশুনি ও সদর উপজেলায়। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা এবং সদর উপজেলার বৈকারী গ্রামে এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ জাকির হোসেন (৫৩), একই গ্রামের শেখ শাকের (২২), শেখ জাহাঙ্গীর (৪৮), শেখ আশিক (৩৩); লস্করী খাজরা গ্রামের শাহিন আলম (২২), একই গ্রামের সজীব (২২); কুড়িকাউনিয়া গ্রামের আনাস বিল্লাহ (২১) ও একই ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের আদম আলী (২৩) এবং হিজলিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেন (১৬) ও সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়নের বৈকারী গ্রামের আসাফুর রহমান (৬০)।
এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা সোমবার রাতে সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর ও কলারোয়া থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। অবশ্য এর আগে থানা থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদসহ পুলিশ সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় সহিংসতায় নিহত ৮ : কুষ্টিয়ায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংসতায় ৮ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ-আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় স্পিøন্টার ও রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে কয়েকশ মানুষ আহত হন। যার মধ্যে বুলেটবিদ্ধ ৮ জন মারা গেছেন বলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া সোমবার রাত থেকে শুরু করে গতকাল দুপুর পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট চলতে দেখা যায়।
নোয়াখালীতে তিন পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৬ : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ। ১২ জন পুলিশ সদস্য এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
বাগেরহাটে শিক্ষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা : বাগেরহাটে ঘরে ঢুকে এক সাবেক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও মেয়ে। সোমবার রাতে সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মৃণাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) ছোট পাইকপাড়া গ্রামের প্রয়াত কেশব লাল চ্যাটার্জির ছেলে। তিনি পাশের মধুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক ছিলেন। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে দলটির বেশ কিছু নেতাকর্মী ও তাদের বাড়িঘরে। এতে অন্তত ৫৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
লালমনিরহাটে আ.লীগ নেতার পোড়া বাড়ি থেকে ৬ লাশ উদ্ধার : লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন খানের থানা রোডের (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন) বাড়ি সোমবার বিকেলে ভাঙচুর করে তাতে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনার পর গতকাল তার বাড়ি থেকে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা সবাই শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
টঙ্গীতে পিটুনিতে যুবলীগ নেতা নিহত : গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে যুবলীগ নেতা ইসমাইল (৩৫) সোমবার রাতে পিটুনিতে নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলার আসামি ছিলেন তিনি।
যশোরে হোটেলে আগুনে বিদেশিসহ আরও ৩ জনের মৃত্যু : যশোর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন হোটেল জাবীর ইন্টারন্যাশনালে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এক বিদেশিসহ আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে সেখান থেকে ২৪ জনের লাশ উদ্ধার হলো। উতম ডি জোকো নামের ওই বিদেশি ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক বলে জানিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।
কুমিল্লায় সাবেক কাউন্সিলর বাড়ি থেকে ৬ লাশ উদ্ধার : কুমিল্লা নগরীর অশোকতলায় গত সোমবার বিকেলে সাবেক কাউন্সিলর মো. শাহ আলমের তিনতলা বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এতে আগুনে পুড়ে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। গত সোমবার রাত ও গতকাল সকালে বাড়িটি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনই কিশোর।
এ ছাড়া জেলার দাউদকান্দি ও তিতাস থানায় হামলার ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের পর দাউদকান্দি ও তিতাস থানা ভবন এবং গৌরীপুর ফাঁড়ি এখন পুলিশশূন্য।
ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা : ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণ ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর হিরণের লাশ শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বরে টাঙিয়ে রাখা হয়। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে কালীগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা জুয়েলের বাড়িতে আগুন দিতে গিয়ে পুড়ে মারা গেছেন দুই আন্দোলনকারী। সোমবার বিকেলে উপজেলার ঢাকালেপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পটুয়াখালীতে নিহত ২ : পটুয়াখালী সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলাসহ অর্ধশতাধিক বাসাবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ সময় দুজন আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী শাহিন ও উত্তম। সোমবার সন্ধ্যায় তারা নিহত হন।
হবিগঞ্জে নিহত আরও ৪ : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে থানার এসআই সন্তোষ চৌধুরীকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে উত্তেজিত জনতা। গতকাল ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া সোমবারের সহিংসতায় আহত আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩ : টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল সদর থানায় দুজন এবং বিকেলে ধনবাড়ী থানার সামনে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ সময় অন্তত ৪০ জন আহত হন।
ডিমলায় শ্রমিক লীগ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা : নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা শ্রমিক লীগের এক সদস্যের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল সকালে লাশটি উপজেলা শহরের বাবুরহাট গ্রামের বকদুল ঝুলা এলাকায় দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। নিহত রফিকুল ইসলাম (৪৫) ডিমলায় ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে বিভিন্ন দূরপাল্লার বাসের কাউন্টার পরিচালনা করতেন।
সোনাগাজীতে যুবলীগ নেতাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা : বোরকা পরে পালানোর সময় যুবলীগ নেতাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সফরপুর গ্রামের কইন্নাখাল থেকে স্থানীয়রা তার মৃতদেহ উদ্ধার করেন। নিহতের নাম মুশফিকুর রহিম মিশু। তিনি ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার সন্ধ্যার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওবায়দুল কদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা পরিবার নিয়ে থাকেন এই বাড়িতে।