ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর হামলা মামলায় অন্যতম আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ও ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদ ও মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিদের অনেকেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুরের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। নৈশভোজ শেষে তিনি গাড়িতে ওঠার সময় হামলাটি হয়।
এই ঘটনায় করা মামলায় ২০২১ সালের মার্চে নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিলেন আদালত। তবে পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ অধিকতর তদন্তের আবেদন করে।
আবেদনে বলা হয়, অভিযোগকারীসহ পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন আসামি হিসেবে বাদী বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তার নাম উল্লেখ করেননি। তাই প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করতে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।
মার্শা বার্নিকাট ২০১৫-২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে বহনকারী গাড়ির ওপর হামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বাংলাদেশের কাছে একাধিকবার জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার এবং এ ব্যাপারে কার্যকর ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে তারা।
রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার চেয়ে সেই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্রও পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই কূটনৈতিক পত্রে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের সদস্যরা হামলাকারীদের মধ্যে দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন। হামলার সময় ওই দুই ব্যক্তি চিৎকার করে বলছিলেন, বদিউল আলম মজুমদার সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত।
গাড়িবহরের দিকে এগোনোর সময় তাদের বাধা দেওয়া হলে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুই সদস্যকে ঘুসি মারেন হামলাকারীরা। গাড়িবহর চলে যাওয়ার সময় দুটি গাড়িতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন হামলাকারীরা। হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সে সময় বাংলাদেশ সরকার বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে বিবৃতি দেয়। এতে তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।