বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের সময় হামলা ও ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম বাদী হয়ে বংশাল থানায় মামলাটি করেন।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে হামলায় সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। অতর্কিত এই হামলায় ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন মডেলের ১৪টি গাড়ি, মেইন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস। হামলায় আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা। হামলায় সিনিয়র কর্মকর্তাসহ আহত হন ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্য।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ও ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ি, পাম্প ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। আগুনের ভয়াবহতা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ চলছিল।
সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে সিদ্দিক বাজারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে অফিসের মধ্যে প্রবেশ করে।
উশৃঙ্খল জনতা একযোগে অফিসে প্রবেশ করে সরকারি কাজে বাধা দেয়। সেসময় তারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের বিভিন্ন সদস্যকে মারধর শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জনতাকে থামাতে গেলে তারা তাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। তারা জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।
হামলার পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে রয়েছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন আসামি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে।