বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে জন্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যববসায়ীদের ক্ষতি নির্ধারণ করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর বঙ্গবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাধ্যমতো যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “ঈদের আগে এমন একটা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যে কষ্ট-কান্না, তা সহ্য করা যায় না। এরই মধ্যে আমি বলে দিয়েছি, তাদের যতটুকু সম্ভব সাহায্য করব এবং কার কেমন ক্ষতি হয়েছে, এটা দেখব।”
ঈদ সামনে রেখে বাড়তি লাভের আশায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পরিচিতদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় লগ্নি করেছিলেন তারা। তবে আগুনে সব পুড়ে যাওয়ায় এখন তাদের সম্বল শুধু হতাশা আর কান্না। এ অবস্থায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠে ঘুরে দাঁড়াতে চান ক্ষতিগ্রস্তরা। ঈদের বাজারে চৌকি পেতে হলেও ব্যবসা করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। সংগঠনটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের জায়গায় ঈদ পর্যন্ত চৌকি বসিয়ে কেনাবেচা করার সুযোগ চেয়েছেন।”
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ব্যবসায়ীদের একটি দল। বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী নেতা শাহ আলম চৌধুরী বলেন, “আমরা মেয়রকে জায়গাটি সংরক্ষণ করতে বলেছি। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে ঈদের আগপর্যন্ত চৌকি বিছিয়ে হলেও আমরা ব্যবসা করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।”
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বঙ্গবাজার মার্কেট এলাকা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এ সময় তিনি পুড়ে যাওয়া মার্কেটের জঞ্জাল সরিয়ে ঈদের আগেই সেখানে অস্থায়ী দোকান বসানোর ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ওই স্থানে নতুন মার্কেট তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানান। সালমান রহমান বলেন, “মেয়র ও আমি একমত যে যত দ্রুত সম্ভব আমরা এটা (ধ্বংসস্তূপ) পরিষ্কার করব। যদি তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে অস্থায়ীভাবেও ব্যবসায়ীরা সেখানে বসতে পারেন, তাহলে কিছুটা হলেও রিকভার হবে।”
এদিন বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর কলোনি মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুঃখ্য প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, “কঠিন সময়ে, পবিত্র ঈদের প্রস্তুতিলগ্নে বঙ্গবাজারে যে দুঃখজনক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনেক মানুষের স্বপ্ন পুড়ে গেছে। অনেক মানুষের অনেক আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু হয়েছে।”